অভয়নগরে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে অনিহা কৃষকদের

যশোরের অভয়নগর সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের অনীহা দেখা যাচ্ছে। তারা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে চাচ্ছে না। বিড়ম্বনা ছাড়াই তারা খোলা বাজারে ধান বিক্রি করছে। ফলে ধান ক্রয়ে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় এবং কৃষকরা কোন বিড়ম্বনা ছাড়াই ধান বিক্রি করতে পারায় তারা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে অনিহা দেখাচ্ছে বলে অনেকের দাবি।

নওয়াপাড়া সরকারি খাদ্যগুদাম সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে বোরো ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৫০৫ মেট্রিক টন। প্রতিকেজি ধানের মূল্য ২৬ টাকা এবং প্রতি মন ১ হাজার ৪০ টাকা। ধান ক্রয় শুরুহয় গত ২৬ মে থেকে। যা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট ২০২০ পর্যন্ত। এ পর্যন্ত ধান ক্রয় করা হয়েছে ৪৫৪ মেট্রিক টন। ধান ক্রয় বাকি আছে ২ হাজার ৫১ মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে অভয়নগর উপজেলায় ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। ধান উৎপাদন হয়েছে ৬১ হাজার ৬০১ মেট্রিক টন। উপজেলার বিভিন্ন ধানের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা বাজারে কৃষকরা স্বাচ্ছন্দে ধান বিক্রি করছেন।

ধান বিক্রি করতে আসা কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হলে তারা জানায়, সরকারিভাবে ধান বিক্রি করতে গেলে অনেক নিয়মনীতি মানতে হয়। বিক্রয়কৃত ধানের টাকা পেতেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। কোন বিড়ম্বনা ছাড়াই খোলা বাজারে ৯৭০ টাকা মন দরে ধান বিক্রি করে সহজে টাকা পাওয়া যাচ্ছে। বিধায় আমরা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি না করে খোলা বাজারে ধান বিক্রি করছি।

নওয়াপাড়া সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল আদম জানান, খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রির আগ্রহ কমে গেছে কৃষকদের। যে কারণে গত দুই মাসে কৃষক সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করেছে ৪৫৪ মেট্রিক টন। এভাবে চললে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্র অর্জনে দেখা দেবে অনিশ্চয়তা। তবে খোলা বাজারে ধানের দাম কমলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে পারে।

এ ব্যাপারে উপজেলা ধান ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুসেইন খাঁন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কৃষকরা ধান মজুদ করায় সরকারি খাদ্যগুদামে ধান ক্রয় কমেছে। আউশ ধান উঠলে মজুদকৃত ধান বিক্রি শুরু করবে কৃষকরা। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।