সাহাবউদ্দিন মেডিকেলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র

করোনা টেস্টের সরকারি অনুমোদন না থাকলেও পরীক্ষা হচ্ছে এমন অভিযোগে রাজধানীর গুলশানের অভিজাত সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে সেটি সিলগালা করেছে র‍্যাব। করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক বলেছিলেন, তারা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড কিট দিয়ে করোনা পরীক্ষা করছিলেন। তার এ দাবিকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বলছে, তাদের কিট সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় কোথাও বিপণন করা হয়নি। সহকারী পরিচালকের দাবি মিথ্যা। ফলে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রবিবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড ডট ব্লট কিট প্রকল্পের সমন্বয়কারী ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।

ডা. মুহিব উল্লাহ বলেন, সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আবুল হাসনাত বলেছেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট দিয়ে আমরা পরীক্ষা করিয়েছি। সেটাই আমরা বলছি, এ কথা উনি কোথায় পেলেন? আমাদের লিগাল ডিপার্টমেন্টকে আমরা পাঠিয়েছি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

এদিকে গণস্বাস্থ্যের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিট এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন পায়নি, বিপণন হয়নি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে করোনা পরীক্ষার জন্য বা ট্রায়ালের জন্য দেয়া হয়নি। গত ১১ জুন আমরা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সকলকে সতর্কও করেছিলাম।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই কিট দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে যে খবর বেরিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা মনে করছি, এটা করোনাজনিত সারাবিশ্ব তথা দেশের এই মহাদুর্যোগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই উদ্ভাবনীর বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের আইনবিভাগ সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমরা সরকারের অ্যান্টিবডি টেস্ট ও কিট-সংক্রান্ত সকল প্রকার নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

গণস্বাস্থ্য বলছে, এ-সংক্রান্ত কোনো প্রকার কিট পরীক্ষার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই কেউ যদি এই ধরনের কোনো তথ্য কোথাও পান অনুগ্রহ করে তা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে র‍্যাব জানিয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে সাহাবউদ্দিন মেডিকেলকে করোনা পরীক্ষার কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তারা করোনার নমুনা সংগ্রহ করে টেস্ট না করেই ফলাফল দিচ্ছিলো। করোনা নেগেটিভ ব্যক্তিকে করোনা পজিটিভ বলে ভর্তি রেখেছিল এবং মোটা অঙ্কের টাকা বিল করছিল। এছাড়া হাসপাতালটিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকার অনুমোদনহীন বেশকিছু করোনা টেস্টিং কিট পাওয়া গেছে।

সাহাবউদ্দিন মেডিকেলে আরটি পিসিআর মেশিন ছিল না, কিন্তু তাও তারা করোনা টেস্ট করেছে এবং প্রতিটি টেস্টের জন্য তিন হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারে দশ বছর আগের মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিক্যাল সামগ্রী পাওয়া গেছে।’

র‍্যাব আরও জানায়, হাসপাতালটিতে বিক্রয় অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেছে।