পাপুলের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আইনি নোটিশ

momen
ফাইল ছবি

মানব ও অর্থপাচারের মামলায় কুয়েতে আটক বাংলাদেশের সাংসদ শহিদ ইসলাম পাপুলের দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে কি না তা জানাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বরাবর একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এসএম জুলফিকার আলী জুনু।

বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।

নোটিশে বলা হয়, কুয়েতের ব্যবসায়ী বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদ ইসলাম পাপুল গ্রেপ্তার হয়ে সে দেশের কারাগারে আছেন বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে কুয়েতের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলা দায়েরের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলেও জানা গেছে। তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সম্মান ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, পাপুল একজন বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে কীভাবে বহির্বিশ্বে শত শত কোটি টাকার ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালিত করছেন তা নিয়ে মানুষের মাঝে কৌতূহল রয়েছে। তিনি কুয়েতের নাগরিক কি না এই বিষয়েও সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা দ্বৈত নাগরিক হলে বাংলাদেশের সংবিধান ও নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী বৈধ সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকে কি না সে বিষয়েও জনগণের মনে প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে পাপুল দ্বৈত নাগরিক কিনা তা জানাতে নোটিশে অনুরোধ জানানো হয়।

কুয়েতে আটক বাংলাদেশি সাংসদের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে গত ৮ জুলাই জাতীয় সংসদে আলোচনা হয়। বিরোধীদল বিএনপির সাংসদ হারুনের অনির্ধারিত আলোচনার প্রেক্ষাপটে সেদিন প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছিলেন, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ শহিদ ইসলাম কুয়েতের নাগরিক হলে, তার আসন শূন্য হবে। বাংলাদেশের সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর কুয়েতের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি বেশ আলোচনায় আসে। তারই প্রেক্ষাপটে ৯ জুলাই সাংসদ পাপুলের দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি স্পষ্ট করে।

কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযুক্ত বাংলাদেশি সাংসদ কুয়েতের নাগরিকত্ব নিয়েছেন বলে যে কথা বলা হচ্ছে তা সত্য নয়। তিনি এলিয়েন্স রেসিডেন্ট ল বা বিদেশিদের জন্য আবাসিক আইনের আওতায় কুয়েতে বসবাস করছেন। বেশ কয়েকটি অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পাবলিক প্রসিকিউশনের দপ্তরে তদন্ত চলছে।

বিবৃতিতে গণমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমে কোনো কিছু প্রচারের আগে এর সত্যতা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেয় কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে আজ পাপুলের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পাপুলকে ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সেলিনা ইসলাম।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে।