সাকিব যেভাবে বিকেএসপিতে প্রস্তুতি নেবেন

shakib

বিকেএসপিতে কাটানো প্রতিটি দিন নিয়েই নাকি চাইলে একটি করে বই লেখা যায়। কথাটা সাকিব আল হাসানের। সেটিই যদি হয়, এবার তাহলে আরও কিছু বইয়ের রসদ পেতে যাচ্ছেন তিনি।

ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুর্নীতি দমন বিভাগকে না জানানোয় সাকিব সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হন গত বছরের ২৮ অক্টোবর। আগামী ২৯ অক্টোবর মুক্তি মিলবে নিষেধাজ্ঞা থেকে। তার আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাকিব দেশে ফিরবেন সপ্তাহখানেকের মধ্যে। আগামী ৪ বা ৫ সেপ্টেম্বর থেকে বিকেএসপিতে শুরু হওয়ার কথা তাঁর মাঠে ফেরার প্রস্তুতি। সেই বিকেএসপি, যেখানে কেটেছে সাকিবের শিক্ষাজীবন। যেখানে তাঁর ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে ওঠা।

যেখানকার আলো-বাতাস, লতা-পাতায় মিশে আছে তাঁর স্মৃতিময় কৈশোর। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্যারিয়ারের নতুন শুরুর এই পর্বেও নিশ্চয়ই সাকিব পাবেন বই লেখার রোমাঞ্চকর সব উপজীব্য।

ফেরার প্রস্তুতি পর্বটা সাকিব সারবেন বিকেএসপিতে থেকেই। আন্তর্জাতিক হোস্টেলের একটি ভিআইপি রুমে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হতে পারে।
বিকেএসপিতে ফিরে আসার প্রস্তুতিটা কেমন হবে, সেই ছক আঁকার দায়িত্বটা সাকিব দিয়েছেন তাঁর পুরোনো দুই কোচ নাজমুল আবেদীন ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে। প্রথমজন বিসিবির চাকরি ছেড়ে এখন বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা। আর ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল কোচ সালাউদ্দিন তো একসময় বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচের দায়িত্বেই ছিলেন। তারও আগে দুজনই আবার ছিলেন বিকেএসপির কোচ। সেই সুবাদে বিকেএসপির ছাত্র থাকার সময় থেকেই সাকিব তাঁদের চেনা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার পরও সাকিব যখনই বাজে সময়ে পড়েছেন, দ্বারস্থ হয়েছেন এ দুজনের। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

এখন পর্যন্ত যা পরিকল্পনা, তাতে খেলায় ফেরার প্রস্তুতি পর্বটা সাকিব সারবেন বিকেএসপিতে থেকেই। আন্তর্জাতিক হোস্টেলের একটি ভিআইপি রুমে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হতে পারে। বিকেএসপিতে ক্যাম্প করতে যাওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররা একই হোস্টেলে থাকলেও সাকিবের সঙ্গে তাঁদের সংস্রব থাকবে না।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ২৪ অক্টোবর শুরু হলে দ্বিতীয় টেস্ট দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারেন সাকিব।
আকসুর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিসিবি নিশ্চিত হয়েছে, সাকিব চাইলে তাঁর প্রস্তুতি পর্বে বিসিবির সুযোগ-সুবিধা, এমনকি কোচদের সাহায্যও নিতে পারবেন। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীই কাল জানালেন, ‘আইসিসির নির্দেশনা অনুযায়ী সাকিব বোর্ডের সুযোগ-সুবিধা এবং কোচদের সাহায্য নিতে পারবে। সে চাইলে বোর্ড তাকে সাহায্য করবে।’ তবে বিসিবির বা জাতীয় দলের কোচদের সঙ্গে সাকিবের কাজ করার ক্ষেত্রে শর্ত হলো, তার অনুশীলনটা হতে হবে এককভাবে। সেখানে আর কোনো ক্রিকেটার থাকতে পারবে না।

বিকেএসপিতে বিসিবির সুযোগ-সুবিধা সাকিবের খুব একটা লাগার কথাও নয়। পুরোনো ছাত্রের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা তো তারাই দেবে! নাজমুল আবেদীন জানিয়েছেন, সাকিবের অনুশীলনে প্রয়োজনে বিকেএসপির অন্যান্য কোচ এবং ট্রেনারের সহযোগিতা নেওয়া হবে। অনুশীলনের পরিকল্পনা মোটামুটি সাজানো হয়ে গেছে বলে মুঠোফোনে বলেছেন তিনি, ‘ও যখন মাঠে নামবে তখন যেন আগের মতো ভালো খেলতে পারে, সেই লক্ষ্যেই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। তবে আমরা তার ক্রিকেটীয় দিকগুলো নিয়ে তেমন চিন্তিত নই। মাঠে নামার মতো ফিটনেস আনাটাই বেশি চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। শুরুতে সেটা নিয়ে কাজ হবে।’