খুলনা-যশোরের সীমান্তে চলছে জমজমাট জুয়া খেলা

খুলনা-যশোরের সীমান্তে চলছে জমজমাট জুয়া খেলা। পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতি রাতে অবৈধ জুয়া খেলা হলেও উৎকোচে তুষ্ট পুলিশ। ফলে নির্বিঘ্নে চলছে এই জুয়ার বোর্ড।

এদিকে, এ জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অনেকে সর্বনাশা জুয়ায় অংশ নিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। কিছু দিন ধরে খুলনা ফুলতলা যুগ্নিপাশা রেললাইন পার হয়ে একটি বাগানের মধ্যে ঘটা করে শুরু হয়েছে। এর কয়েক দিন আগে যশোর শহরের কারবালা এলাকায়, যশোরের অভয়নগর সিদ্ধিপাশা পুলিশ ক্যাম্পের পাশে, এরপর স্থান পরিবর্তন করে পাটকেলঘাটা ও কলারোয়ায় জুয়া বোর্ড বসায় এই চক্রটি। ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে জুয়াবাজ চক্রটি। ফলে ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যায় জুয়াবাজরা।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, পুলিশ আর স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ছত্রচ্ছায়ায় রীতিমতো প্যান্ডেল বানিয়ে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জুয়া খেলা চলছে। আর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের জুয়াড়িরা এতে অংশ নিচ্ছে। আর তাতে লাখ লাখ টাকা হাতবদল হচ্ছে। এমনকি জুয়া খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য ধনাঢ্য জুয়াড়িদের গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে স্থানীয় একটি মাদ্রাসা মাঠ।

স্থানীয় প্রভাবশালী জুয়া বোর্ডের কামালের পরিচালনায় আর প্রশাসনের অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে এলাকাবাসী ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না। কামালের সাথে জুয়া বোর্ড পরিচালনায় রয়েছে খুলনার বশির, ফুলতলার মঈন, যশোরের নওয়াপাড়ার আসাদ বিশ্বাস ও হাসান এবং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের নয়ন।

বিভিন্ন স্থান থেকে জুয়াড়িরা প্রাইভেট কার, পাজেরো জিপ ও বাসে করে এখানে আসছে। আয়োজকরা জুয়াড়িদের আনার জন্য নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়াড়িরা জুয়ায় অংশ নিচ্ছে।

জুয়া বোর্ড পরিচালনার ব্যাপারে কামাল, বসির, হাসানের মোবাইলে ফোন করা হলেও তারা কেউ রিসিভ করেননি।

জানা যায়, প্রতি রাতে এখানে কোটি টাকার জুয়া খেলা হয়। কথা হয় স্থানীয় চায়ের দোকানে বসে থাকা আহম্মদ আলীর সাথে। তিনি জানান, এখানে প্রতি রাতে ওয়ান জমজমাট জুয়া খেলা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক আসে।

স্থানীয় কলেজ ছাত্র রকিব ও মেহেদী জানান, এখানে নিয়মিত জুয়ার আসর বসে। বিষয়টি সবাই জানে। এলাকায় তেমন কেউ নেই যে প্রতিবাদ করবে।

তারা আরো জানায়, জুয়া খেলার কারণে এলাকায় চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি বেড়ে গেছে। রাজঘাট এলাকার কালকারখানায় প্রতি রাতে চুরি হচ্ছে। মানুষ চুরি করে জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। এমনকি জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে যে কোন মুহুর্তে খুন-রাহাজানিসর মতো বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ফুলতলা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, আমরা জানতে পারলেই অভিযান চালাবো। ফুলতলা থানা এলাকার মধ্যে কোন জুয়া চলবে না।

খুলনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ শেখ রাসেল কবির কনি মিয়া বলেন, আমরা তদন্ত করছি। আমরা খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেব।