ভ্যাকসিন কেনায় বরাদ্দ বাড়ছে , একনেকে উঠছে সাত প্রকল্প

করোনা মোকাবেলায় সরকারের নানা পদক্ষেপের মধ্যে ভ্যাকসিন অন্যতম। ভ্যাকসিন কেনার লক্ষ্যে গেল বছরের ১৮ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের জরুরি ঋণ ঘোষণার পর সরকার ‘কভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডামিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ নামের একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয়। এই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল দুই হাজার ৪৭২ কোটি ৯ লাখ টাকা। এখন নতুন করে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে আরো চার হাজার ৩১৪ কোটি ৪৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা। এতে প্রকল্পের মোট খরচ দাঁড়াবে ছয় হাজার ৭৮৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় ভ্যাকসিন কেনায় ২০২১ সালের জুনের মধ্যে খরচ করা হবে তিন হাজার ৩০ কোটি টাকা। বাকি টাকা পর্যায়ক্রমে খরচ করা হবে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। ভার্চুয়ালি গণভবন থেকে সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। এ সভায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত থাকবেন। অন্যদিকে শেরেবাংলানগর মন্ত্রিসভা কমিটি পরিষদ (এনইসি) সম্মেলনকক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।

গোটা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১০ কোটি ডলারের লেন্ডিং করতে সম্মত হয়েছে, যা এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া প্রকল্প সংশোধনের প্রধান কারণ হিসেবে করোনা ভ্যাকসিন কেনা বাবদ কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় হাজার ৭৮৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১৭২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং বিশ্বব্যাংক ও এআইআইবি ঋণ দেবে ছয় হাজার ৬১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

ভ্যাকসিন কেনা প্রসঙ্গে প্রকল্পের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘নতুন করে চার হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ভ্যাকসিন কেনা, পরিবহন ও সংরক্ষণ বাবদ রাখা হচ্ছে। প্রকল্পটি আজ একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।’

এদিকে পরিকল্পনা কমিশন ভ্যাকসিন দেওয়ার অনুমোদিত নীতিমালা সবার জন্য সহজভাবে সারসংক্ষেপ আকারে প্রণয়ন এবং ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়ার একটি সহজবোধ্য ফ্লো-চার্ট ডিপিপিতে সংযুক্ত করতে নির্দেশনা দিয়েছে। প্রতি উপজেলায় ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে প্রচারের জন্য ব্যানার, মাইকিং ও প্রকাশনা খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখতেও বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য দুটি মোবাইল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ভ্যানের সংস্থান রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১০ শয্যার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং ১০ জেলায় মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

একনেকের আজকের সভায় আরো ছয়টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। সেগুলো হলো কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধনী), জেলা পর্যায়ে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ (প্রথম ধাপ), সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প, ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগকালের অনুসন্ধান, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ (তৃতীয় পর্যায়), জেলা মহাসড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ত উন্নীতকরণ (সিলেট জোন), চিটাগাং সিটি টাওয়ার রিংরোড (তৃতীয় সংশোধনী)।