বছরের প্রথম সংসদ অধিবেশন শুরু

মহামারি করোনাকালে জাতীয় সংসদের চলতি বছরের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় চলমান একাদশ সংসদের ১১তম অধিবেশন শুরু হয়।

নিয়ম অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংসদে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার প্রথমে সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন করেন। এবার অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন- নজরুল ইসলাম, আফতাব উদ্দিন সরকার, আব্দুস সালাম মুর্দেশী, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মমতাজ বেগম।

স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে অগ্রবর্তীজন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন।

পরে অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়নের পর স্পিকার শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সাবেক সংসদ সদস্য আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন, খালেদুর রহমান টিটো, শাহ-ই-জাহান চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী মোহাম্মদ আবু হেনা, এমএ হাসেম, আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন খান, সামসুদ্দীন আহমেদ, নুরজাহান ইয়াসমিন, খালেদা পান্নার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারী কোরবান আলীর মৃত্যুতেও শোক প্রকাশ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচী শেখ রাজিয়া নাসের, জা রওশন আরা ওয়াহেদ, এমপি হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়শা খানম, কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, ভাষা সৈনিক জাহিদ হোসেন মুসা মিয়া, কবি মনজুরে মাওলা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান, অভিনেতা আলী যাকের, সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ শাহাদাৎ হোসেন খান, বীর উত্তম ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ, অভিনেতা আবদুল কাদের, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের স্ত্রী বুলা আহাম্মেদ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতেও সংসদে শোক প্রকাশ করা হয়।

সাধারণত বছরের প্রথম অধিবেশন দীর্ঘ হয়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর সংসদ সদস্যরা অধিবেশন জুড়ে ওই ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন। তবে করোনার কারণে এবারের অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হতে পারে বলে আগেই জানিয়েছেন সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।

করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অধিবেশন চলবে। তবে অধিবেশনের এই প্রথমদিন সাংবাদিকসহ সীমিতসংখ্যক অতিথির সংসদে প্রবেশের সুযোগ ছিল।

এর আগে বিশেষ অধিবেশনসহ গত ৪টি অধিবেশন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হয়। প্রতি কার্যদিবসে ৭০-৮০ জন সংসদ সদস্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। করোনার ঝুঁকি এড়াতে মাঝখানে গ্যাপ দিয়ে দিয়ে আসন বিন্যাস করা হয়। সংসদ অধিবেশন চলাকালে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হয়। এমনকি অধিবেশনে যোগদানের ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত করা হয়।

উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদের অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরবর্তী অধিবেশন বসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর সংসদের ১০ অধিবেশন শেষ হয়। ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া অধিবেশনটি ছিল সংসদের বিশেষ অধিবেশন। ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে ওই অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর বিশেষ আলোচনা ও সাধারণ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।