পর্দা নামল ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের

পর্দা নামলো ঊনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। ১৫টি পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে উৎসবের সমাপনী হলো রোববার সন্ধ্যায়। এতে বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে ফাখরুল আরেফীন খান পরিচালিত ‘গন্ডি’ বেস্ট অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড ও মাসুদ হাসান উজ্জ্বল পরিচালিত ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।
করোনাকালীয় পরিস্থিতির মধ্যে নয় দিনের এই উৎসবে দর্শকদের উপস্থিতি আশানুরোপ ছিল বলে আয়োজকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে অনলাইনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারে ২০ হাজার দর্শক-স্রোতা অংশ নেন বলে জানানো হয়। জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বক্তব্য রাখেন উৎসবের নির্বাহী কমিটির সদস্য ম হামিদ ও উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। অতিথিরা বিজয়ী ও তাদের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হয়েছে মঙ্গোলিয়ান ছবি ‘দ্য রোড টু ইডেন’। শ্রেষ্ঠ স্ক্রিপ্ট রাইটার হয়েছেন নাসিম আহমদপুর ও শারাম মোকরি (ক্যায়ারলেস ক্রাইম)। একই বিভাগে শ্রেষ্ঠ সিনেমাট্রোগ্রাফার হয়েছেন ওটগনজুরিগ ব্যাচুলুউন (দ্য ওম্যান)। এছাড়া শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী মেরুইরট সুব্বুসিনোভা ও শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন নিজাত ইসলার (৯৭৫)। শ্রেষ্ঠ পরিচালক কসেনিয়া লাগুটিনা (ফারিদা)।

শ্রেষ্ঠ শিশু চলচ্চিত্র বাদল রহমান পুরস্কার পেয়েছে রাশিয়ান চলচ্চিত্র ‘তাগানক টিম’। নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা বিভাগ-স্বল্পদৈর্ঘ্যে ইরানী সিনেমা ‘তিরিশকো’র জন্য শাকিবা খালেঘি ও একই বিভাগে স্পেশাল ম্যানশন পুরস্কার পেয়েছেন সুডেনের জেসিকা লরেন, সিনেমা ‘ওয়ে হোম’।

নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা বিভাগ-শ্রেষ্ঠ তথ্যচিত্র হয়েছে ইভডোকিয়া মোসকভিনা পরিচালিত ‘ফরবিডেন চিলড্রেন’ (রাশিয়া-সিরিয়া)। সেরা নারী নির্মাতা হয়েছে মারগারিদা পাইভা (দ্য লিটল ব্ল্যাক ড্রেস)। স্পিরিচ্যুয়াল চলচ্চিত্র বিভাগে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হয়েছে সাইপ্রাসের মারিনোস কারতিক্কিস পরিচালিত ‘সিনিয়র সিটিজেন’। একই বিভাগে শ্রেষ্ঠ ডকুমেন্টারি হয়েছে মেহরদাদ ওস্কৌই পরিচালিত ‘সানলেস শ্যাডো’।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে জীবন থমকে গেলেও, রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ থেমে যায়নি৷ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাও অব্যাহত রয়েছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের দিক দিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের অবস্থান তৃতীয়। আমরা এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে সক্ষম দেশে পরিণত হয়েছি৷

তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, সমকালকে সংরক্ষণ করে। বর্তমানে ওটিটি মাধ্যমের প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়লেও সিনেমা হলে প্রতি মানুষের আগ্রহ একেবারে কমে গেছে একথা সত্য নয়৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬ হাজার সিনেমা হল রয়েছে। ভারতে আছে ৮ হাজার হল। বাড়ছে সিনেপ্লেক্সের সংখ্যা। বাংলাদেশেও চলচ্চিত্রের উন্নয়নে এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ বরাদ্দ করা হয়েছে।

বাংলাদেশসহ ৭৩টি দেশের ২২৬টি চলচ্চিত্র নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি শুরু হয় নয়দিনের উনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব৷এ উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে৷ এবারের উৎসবে মিলনায়তনের পাশাপাশি অনলাইনেও চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ ছিল।