জাবি শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ, নইলে আইনগত ব্যবস্থা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শিক্ষার্থীদের হলত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে হলত্যাগ করার নির্দেশনা না মানলে অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করা হয়েছে।

রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কোনো কোনো আবাসিক হলে অবস্থান নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ২২ তারিখ সকাল ১০টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।
তবে এ নির্দেশনা মানতে দেখা যায়নি ছাত্রদের। সকাল দশটার মধ্যে কাউকে হল ত্যাগ করতে দেখা যায়নি।

এদিকে এ বিষয়ে সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা এখন মিটিংয়ে আছি। মিটিং শেষে প্রতিটি হলের প্রভোস্টের উপস্থিতিতে হলগুলো পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলা হবে। তাদেরকে হল ত্যাগের জন্য অনুরোধ করা হবে।

এ অনুরোধ উপেক্ষা করলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, পরবর্তীতে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্যাম্পাসসংলগ্ন গেরুয়ার স্থানীয় লোকজনের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে জাবির অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। এ ছাড়া ক্যম্পাসের বাহিরে শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ মনে করায় শনিবার বিকালে আবাসিক হলের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করা শুরু করেন।

এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় গেরুয়াবাসীর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে রবিবার বিকালে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল মামলাটি করেন।

এদিকে ছেলেদের হলগুলোতে ছাত্ররা অবস্থান করতে পারলেও মেয়েদের হলে উঠতে পারেননি ছাত্রীরা। রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলন করে সোমবারের মধ্যে ছাত্রীদের হলে ওঠার ব্যবস্থা না করলে আবারও তালা ভাঙার হুশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে ভেতরে অবস্থানরতদের বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্য মৌলিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়াসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন। তাদের অন্য দাবিগুলো হলো– গেরুয়ায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের পুলিশি নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনা, হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া।