যশোরে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর ফাঁসি

যশোরে স্ত্রী হত্যার দায়ে মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) জেলা সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক এই রায় প্রদান করেন।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম বাঘারপড়া উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি মনিরুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ১৯ বছর আগে আসামি মনিরুল ইসলামের সাথে বাঘারপাড়া উপজেলার হাবুল্যা গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে তারা বেগমের বিয়ে হয়।

দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি ছেলে এবং একটি মেয়ের জন্ম হয়। আসামি মনিরুল ইসলাম তার স্ত্রীকে বিভিন্ন কারণে মারপিট করতেন। হত্যাকান্ডের ২৫ দিন পর ২০১২ সালের ৭ অক্টোবর নিহতের মা সবুরা খাতুন জানতে পারেন, তার মেয়ে নাকি কোথায় চলে গেছে।

এ খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন ৮ অক্টোবর দুপুরে সবুরা খাতুন ভাতুড়িয়া গ্রামে মেয়ের বাড়িতে যান। সেখানে নাতি আবু হুরাইরার কাছে তিনি জানতে পারেন, জামাই মনিরুল ইসলাম তার মেয়ে তারা বেগমকে মুখে গামছা ও বালিশ চাপা দিয়ে এবং সেই বালিশের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন।

পরে মরে গেলে ঘাড়ে করে তারা বেগমের লাশ ঘরের পিছনের বাগানে নিয়ে যান। নাতির কাছে এই খবর পেয়ে জামাই মনিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করিলে তিনি স্বীকার করেন।

তিনি শাশুড়িকে জানান যে, একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টার দিকে তারা বেগমকে ঘরের পশ্চিম পাশের বাগানে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছেন। রাতে এখবর শুনে তাৎক্ষণিক স্থানীয় রায়পুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শিবু প্রসাদকে মোবাইল ফোনে ঘটনা জানান সবুরা বেগম।

পরে এসআই শিবু প্রসাদ ও বাঘারপাড়া থানার ওসি ঘটনাস্থলে এলে মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে তারা ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারেন এবং তাকে আটক করেন।

পরদিন ৯ অক্টেবর সকালে পুলিশ আটক মনিরুল ইসলামের দেখানো স্থান থেকে তারা বেগমের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা সবুরা বেগম বাঘারপাড়া থানায় মনিরুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিবু প্রসাদ দত্ত তদন্ত শেষে আসামি মনিরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত বিচার প্রক্রিয়া শেষে এ রায় প্রদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিউকিটর (পিপি) এম ইদ্রিস আলী।