মোদির আলিঙ্গনে ‘বিরক্ত’ গুতেরেস

কোভিডের সময়ে গ্লাসগোয় জলবায়ু সম্মেলনে আলিঙ্গন করে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একের পর এক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে আলিঙ্গনের ঘটনাকে সমালোচনা করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমও।

জলবায়ু সম্মেলনে মোদি স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিয়ো গুতেরেসকে। এ ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েন গুতেরেস।

তার অস্বস্তি সংবলিত আলিঙ্গন মুহূর্তেই ধরা পড়ে ক্যামেরায়। যেভাবে সাড়া মিলবার আশা ছিল মোদির সেভাবে তিনি সাড়া পাননি। গুতেরেস পুরো বিষয়টিতে যে বিরক্ত ছিলেন তা তার অভিব্যক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে।

তবে গুতেরেসকে না পারলেও কিন্তু অন্য রাষ্ট্রনেতাদের সহাস্যে মোদি বেশ ভালোভাবেই জড়িয়ে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন কানাডার জাস্টিন ট্রুডো, লুক্সেমবুর্গের জ়াভিয়ের বেটেলসহ অনেকেই।

দেশে হোক বা বিদেশে, যে কোনো রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমেই নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হন। তার শুভানুধ্যায়ী, গুণমুগ্ধেরা বলে থাকেন এটা নাকি প্রধানমন্ত্রীর ‘আলিঙ্গন-কূটনীতি’।

কোভিড কালে সেই ‘আলিঙ্গন’ই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। জলবায়ু সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আলিঙ্গনে দৃশ্যতই ‘অস্বস্তি’তে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস।

জলবায়ু সম্মেলনে ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়, গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে এ প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এছাড়া মোদি আরও পাঁচটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বিবিসি জানাচ্ছে, এই প্রথম কোনো দেশ এমন প্রতিশ্রুতি দিল। শূন্যের কোঠা বা কার্বন নিরপেক্ষতা মানে নিয়ে যাওয়া মানে বায়ুমণ্ডলে আর গ্রিন হাউস গ্যাস যোগ হবে না।

আগেও অন্যান্য প্রধান দূষণকারী দেশগুলোর মতো কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেনি ভারত। চীন, ইইউর পর বিশ্বের অন্যতম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনকারী দেশ ভারত।

চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরে ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনকারী দেশ। কিন্তু এর বিশাল জনসংখ্যার দেশ মাথাপিছু নির্গমন বিশ্বের অন্যান্য প্রধান অর্থনীতির দেশের তুলনায় তুলনায় অনেক কম।

ভারত ২০১৯ সালে জনসংখ্যার প্রতি মাথাপিছু ১ দশমিক ৯ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করেছে, সেই বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৫.৫ টন এবং রাশিয়ার জন্য ১২.৫ টন নির্গমন করেছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, মোদির ঘোষণা অনুযায়ী ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা কতটা কার্যকর হবে পৃথিবীর জন্যে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, এবারের সম্মেলনের লক্ষ্য ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা। তবে নরেন্দ্র মোদি আরও ২০ বছর পিছিয়ে ২০৭০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা জানালেন।