বেশি ভাড়া নিলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা: কাদের

মালিক-শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দকে পুনর্নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় এবং যাত্রী ভোগান্তি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অন্যথায় দায়ী পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ পুনর্নির্ধারিত হারে ভাড়া আদায়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও সোমবার (০৮ নভেম্বর) বিভিন্ন পরিবহনে অধিক হারে ভাড়া আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (০৯ নভেম্বর) সকালে সচিবালয়ে তাঁর দফতরে ব্রিফিংকালে এ আহ্বান জানান।

ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধিতে সরকার ডিজেলচালিত যাত্রীবাহী পরিবহনের ভাড়া পুনর্নির্ধারন করছে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে আজ থেকে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে বিআরটিএ’র মোবাইলকোর্ট পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতিমধ্যে দেশব্যাপী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে মোবাইলকোর্ট পরিচালনার জন্য মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, হাইওয়ে পুলিশ,জেলা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আবারও মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভাড়া আদায়ের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, তা না হলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

কিছু কিছু গণমাধ্যম দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলেও দু-একটি গণমাধ্যম বিরূপ ও অপমানজনক সমালোচনা করছে, যা প্রত্যাশিত নয়। অন্যদিকে কেউ কেউ পাতানো খেলা বলছে, অনেকেই আঁতাতের গন্ধও খুঁজে পেয়েছেন উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, যাত্রীকল্যাণ সমিতি নামে একটি ভুয়া সংগঠনও বিষয়টি না জেনে, না বুঝে যা নয় তা সমালোচনা করছে।

ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, তাহলে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে সেটা কি জনগণের জন্য কল্যাণকর হতো? সেক্ষেত্রে মন্ত্রী মনে করেন যাত্রী ভোগান্তি কমাতে অতীতের ধারাবাহিকতায় গণমাধ্যমের মূল্যবান পরামর্শ আমাদের কাছে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।

বিএনপির আমলে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা, সেটা বিএনপি ভুলে গেলেও জনগণ ভুলেনি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির ৫ বছরে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছিল ৮ বার। তারা মূল্য কমাতে পারেনি।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকলেও দেশে তারা দাম বাড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ গত ১৩ বছরে ৫ বার মূল্যবৃদ্ধি করলেও ৫ বার মূল্য হ্রাসও করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের ৭ দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করেছিলেন।

বিএনপি নেতাদের বক্তব্য শুনলে মনে হয় দেশ যেন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, কিংবা দুর্ভিক্ষ চলছে এবং জনগণের পিঠ নাকি দেয়ালে ঠেকে গেছে, – বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে এসব নেতিবাচক বক্তব্য একটি দায়িত্বহীন রাজনৈতিক দলের হতাশার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়।

জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকেনি, দেশের জনগণ এগিয়ে চলছে সম্মুখ পানে, এমনটা মনে করে ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বিএনপির।বিএনপির অন্ধ বিষোদগার আর মিথ্যাচারের রাজনীতি তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে চরম অনিশ্চিত ও বর্তমানকে করেছে ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।

এজন্যই বিএনপি আজ হতাশার সাগরে নিমজ্জিত বলে খড়-কুটো ধরে বাঁচার নিষ্ফল চেষ্টা করছে বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।