বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছে

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা খুব পরিস্কার করে বলেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। আমরা বলেছি জনগণ যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। এটিই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।

বৃহস্পতিবার ১১ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি আয়োজিত ‘আজকের প্রেক্ষাপটে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আবার ’৭৫-এর বাকশালের মতো গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। গত একযুগে আমাদের সব গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ব্যবস্থা ছিল, এই দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সেটা মেনে নিয়েছিলেন।

সেটা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষের মতামতের ভিত্তিতে সরকার ও পার্লামেন্ট গঠন করার যে বিষয়টি ছিল সেটা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। প্রশাসনকে ধ্বংস করা হয়েছে।

সবচেয়ে ভয়াবহ হলো, আমাদের বিচার ব্যবস্থাকে পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছে। এখন বিচার পাওয়াটা প্রায় অসম্ভব। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ১১ বছর সাজা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পুরনো আইনজীবীরা বলেছেন, এটা কখনও কাম্য হতে পারে না। এতে বিচার ব্যবস্থার ওপর মানুষ আস্থা হারাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ’৭৫ এর ৭ নভেম্বরের আগের সংকটে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আমাদের যা কিছু অর্জন ছিল তা হারিয়ে ফেলেছি। সে জন্যে বার বার করে বলছি, আমাদের গণতন্ত্রের যে নেত্রী, যিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন,

সংগ্রাম করেছেন তিনি আজকে কারাগারে। আমরা যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছি নতুন করে সংগ্রাম করার সেই নেতা দেশ থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছেন। আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। ৫০০ এর অধিক গুম হয়েছে। হাজারও নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এই যে একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ঘাড়ের ওপর চেপে বসে সব অর্জন ধ্বংস করে দিচ্ছে, এর থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এ দেশের সব মানুষ ও রাজনৈতিক সংগঠনকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে পরাজিত করতে হবে। সত্যিকার অর্থেই একটা আইনের শাসন, একটা মুক্ত অর্থনীতি ও একটা মুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।