মেয়র পলাশের হুমকিতে আদালতে সাক্ষী পরিবর্তনের আবেদন বাদীর

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলায় সাক্ষ্যের শুনানির দিন ধার্য ছিল মঙ্গলবার। মামলার বাদী এদিন আদালতকে জানান, আসামি পলাশ তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সাক্ষীদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।

এ কারণে আদালতে আসতে রাজি হচ্ছেন না তারা। এ জন্য বাদী মামলার সাক্ষী পরিবর্তনের জন্য আদালতে আবেদন জানান। এদিন আদালতে হাজিরের কথা ছিল হায়দার গণি খান পলাশেরও। কিন্তু তার পক্ষের আইন জীবী আদালতকে জানান আসামি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

এ কারণে হাজির হতে পারেননি। দু’ পক্ষের শুনানি শেষে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমান বাদীর আবেদন নথিভুক্ত করেন ও আসামির সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৭ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী মনজুর কাদের আশিক।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি যশোর সদর উপজেলার নতুন উপশহর এফ ব্লকের আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, নতুন উপশহর এফ ব্লকে ২.৯৩ শতক জমি ছিল পলাশের।

যা সাড়ে চার লাখ টাকায় বিক্রির জন্য ২০০৪ সালের ৯ অক্টোবর বাদীর কাছ থেকে বায়না স্বরূপ ৬০ হাজার টাকা নেন তিনি। যা পরের দিন নোটারির পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করা হয়। পরবর্তীতে বাদীর কাছ থেকে বাকি তিন লাখ ৯০ হাজার টাকা নেন পলাশ। পরে জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে বললে তিনি ঘুরাতে থাকেন।

একপর্যায়ে ২০০৫ সালের ১৪ মার্চ পলাশ ওই জমির আমমোক্তারনামা করে দখল বুঝিয়ে দেন বাদীকে। বাদী ওই জমিতে বাড়ি ও দোকান করে ভাড়া দেন। এরপর ওই বাড়ি ও দোকান ভাড়ায় ভাগ বসান পলাশ। একপর্যায়ে জোর করে ওই ভাড়ার টাকা আদায় করেন তিনি।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে মীমাংসায় বসা হয়। সেখানে পলাশ জানান, তিনি জমি এবং টাকা কোনোটায় দিবেন না। পারলে আদায় করে নিতে বলেন। এরপর বাধ্য হয়ে বাদী লিগ্যাল এইড এর আশ্রয় নেন। সরকারপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে আদালতে মামলা করেন সুফিয়া বেগম।

এদিকে মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই যশোরের এসআই জিয়াউর রহমান ঘটনার সত্যতা পেয়ে ২০২০ সালের ৪ জুন আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন তিনি। পরে মামলাটির বিচার কাজ শুরু হয়। রোববার মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের শুনানির দিন ছিল।

এ মামলার সাক্ষী ছিলেন উপশহর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান, ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের সুলতান মাহমুদ ও নতুন উপশহরের শুকুরের ছেলে নাজিমুদ্দিন। বাদীর দাবি, সাক্ষীদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। এ কারণে তারা আদালতে আসতে রাজি হচ্ছেন না।

ফলে,বাঘারপাড়া উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের মৃত খোরশেদ জোয়াদ্দারের ছেলে সুলতান মাহমুদ ও উপশহরের আমজাদ হোসেনের মেয়ে জেসমিন নাহারকে মামলার সাক্ষী হিসেবে নথিভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছেন বাদী সুফিয়া।