বাংলাদেশের জন্য আগের মতোই কাজ করবে জাতিসংঘ

mustafa kamal
ফাইল ছবি

জাতিসংঘ বাংলাদেশকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহযোগী হিসেবে আগের মতো কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

রোববার ২১ নভেম্বর এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে দ্য ইউনাইটেড নেশনস সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কো অপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখেন। এতে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন- অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মিজ ফাতিমা ইয়াসমিন ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিজ মিয়া সেপ্পো।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবনের স্বপ্ন ছিল একটি দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

জাতির পিতার সেই অর্থনৈতিক দর্শন অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে করোনা পূর্ববর্তী গত এক দশক আমাদের গড়ে ৭.৪ শতাংশ অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

তিনি বলেন, অভিঘাত কোভিড-১৯ মহামারিকালে গত বছর যেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, এমন ক্রান্তিকালেও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে।

অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সভার টেকসই উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২১-এ আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করেছে।

আমাদের স্বাধীনতার লগ্ন থেকেই জাতিসংঘ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ও বিশ্বস্ত অংশীদার এবং আমাদের সার্বিক উন্নয়ন অর্জনে এ সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে এবং ২০৩০ এজেন্ডা অর্জনে আবারো গতি অর্জনে এ ফ্রেমওয়ার্ক ভূমিকা রাখবে।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণ করতে চলেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য অর্জন এবং এ উন্নয়নের সুবিধাসমূহ যেন সবাই সমানভাবে পায়, তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।

বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীগুলোর জীবনে বাস্তব ও টেকসই পরিবর্তন আনার লক্ষ্য অর্জনে এ ফ্রেমওয়ার্ক কাজ করবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মিজ ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় সরকার ও জাতিসংঘ কান্ট্রি টিমের যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়নের পটভূমি তৈরি হবে,

যা বাংলাদেশ সরকার প্রণীত অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে বেগবান করবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রেমওয়ার্ক, যা এলডিসি থেকে উত্তরণ, কোভিড-১৯ এর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা এবং এসডিজি অর্জনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে আমাদের পথ নির্দেশনা দেবে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী মিজ মিয়া সেপ্পো বলেন, কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নে সরকার ও অংশীদারদের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।

তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা, প্রতিটা শিশুর জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা দেয়া, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ পরিবার দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে থাকবে মর্মে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

প্রকাশনা অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা, বাংলাদেশে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর প্রধানরা, নিউইয়র্কে ইউএন ডেভেলপমেন্ট কোঅর্ডিনেশন অফিসের পরিচালক রবার্ট পাইপারও পূর্ব ধারণকৃত বক্তব্য রাখেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের উদ্যোগে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছে।