২১ দিনের ‘পথে পথে বিজয়’ শুরু হচ্ছে ২৬ নভেম্বর

আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক পর্যায়ে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদর্শন করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। আর এজন্য সরকারের এই প্রতিষ্ঠানটি সারাদেশে ২১টি মহাসমাবেশ করবে। যার শুরু হবে আগামী ২৬ নভেম্বর দিনাজপুরে উপ আঞ্চলিক মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে।

বুধবার ২৪ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা জানান মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মোজাম্মেল হক বলেন, এ বছর আমরা জাতীয়ভাবে উদযাপন করছি মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি তথা সুবর্ণজয়ন্তী।

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপনের জন্য গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটি ৫০টি জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি কর্মসূচি হলো ‘পথে পথে বিজয়’ শিরোনামে দেশের বিভিন্ন স্থানে শত্রুমুক্ত হবার দিনে আঞ্চলিক মহাসমাবেশ।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের পর থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বছর ২০২১ সাল এবং এই গুরুত্বপূর্ণ মাহেন্দ্রক্ষণ আমাদের প্রত্যেকেরই উদযাপন করা উচিৎ।

তাই এই গুরুত্বপূর্ণ আনন্দক্ষণ উদযাপন করতে আমরা ফিরে যেতে চেয়েছি, আমাদের গৌরবময় ইতিহাসে তুলে ধরতে চেয়েছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পরিচয়।

যদিও বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে বিজয় অর্জন করেছিল কিন্তু দেশের অনেক অঞ্চলে বিজয় এসেছিলো ১৬ ডিসেম্বরের আগেই, হয়েছিলো শত্রুমুক্ত।

সেভাবেই আমাদের প্রথম বিজয় আসে পঞ্চগড়ে, নভেম্বরের ২৯ তারিখে এবং সাথে সাথে পঞ্চগড়কে শত্রুমুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে আরও অনেক অঞ্চলও শত্রুমুক্ত হওয়া শুরু হয়।

আমরা এই বিজয়গুলো উদযাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের কাছে এই শত্রুমুক্ত অঞ্চলগুলোর তাৎপর্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মন্ত্রী বলেন, মহাসমাবেশগুলো শহরের প্রাণকেন্দ্রে যেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা,

জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাহিত্যিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পী, ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারবে এমন উন্মুক্ত স্থানে এ অনুষ্ঠিত হবে।

মহাসমাবেশে বিভিন্ন কার্যক্রম প্রদর্শনী, খেলা, কুইজ, আলোচনা, সংবর্ধনা, পুরস্কার বিতরণসহ বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সারা দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য সকল শ্রেণিপেশার মানুষ এ আঞ্চলিক মহাসমাবেশে অংশ নেবেন।

৭টি আঞ্চলিক ও ১৪টি উপ-আঞ্চলিক মহাসমাবেশ করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে— বিজয়ের গল্পগুলো পুনরায় বলা, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে পুনরায় জানা এবং সম্মান প্রদর্শন করা,

যুদ্ধের অসাধারণ গল্পগুলো উপভোগ করা, তরুণদের যুদ্ধের ইতিহাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, সবাইকে এই বিজয় দিবসের বিশালতা উপলব্ধি করা, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী দেশব্যাপী উদযাপন করা।

আঞ্চলিক মহাসমাবেশ স্থান ও সময়— পঞ্চগড়ে ২ ডিসেম্বর, যশোরে ৬ ডিসেম্বর, গোপালগঞ্জে ৭ ডিসেম্বর, কুমিল্লায় ৮ ডিসেম্বর, জামালপুরে ১১ ডিসেম্বর, কক্সবাজারে ১২ ডিসেম্বর এবং সিলেটে-১৫ ডিসেম্বর।

উপ আঞ্চলিক মহাসমাবেশের স্থান ও সময়— দিনাজপুরে ২৬ নভেম্বর, ঠাকুরগাঁওয়ে ২৮ নভেম্বর, ঝিনাইদহে ২৮ নভেম্বর, মাগুরায় ৩০ নভেম্বর, ফরিদপুরে ১ ডিসেম্বর, মাদারীপুরে ৩ ডিসেম্বর, বাহ্মণবাড়িয়ায় ৪ ডিসেম্বর, ফেনীতে ৬ ডিসেম্বর,

ময়মনসিংহে ৬ ডিসেম্বর, শেরপুরে ৮ ডিসেম্বর, মিরসরাইয়ে ৯ ডিসেম্বর, পটিয়ায় ১১ ডিসেম্বর, মৌলভীবাজারে ১১ ডিসেম্বর এবং সুনামগঞ্জে ১৩ ডিসেম্বর।