যে কারণে বাতিল হলো আমীর হামজার স্বাধীনতা পুরস্কার

নানা সমালোচনার মুখে স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হলো প্রয়াত কবি আমির হামজার নাম। গতকাল আমীর হামজার নাম বাদ দিয়ে সংশোধিত নতুন তালিকা ঘোষণা করা হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল এক মন্ত্রী জানিয়েছেন আবেদনে ‘অসত্য ও ভুল’ তথ্যের পাশাপাশি তথ্য ‘গোপন করায়’ তালিকা থেকে আমীর হামজার নাম বাতিল করা হয়।

গত ১৫ই মার্চ ২০২২ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ১০ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা হয়েছিল। আমির হামজার নাম সাহিত্য ক্যাটাগরিতে দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে সমালোচনায় মেতে ওঠেন। গণমাধ্যমেও তাকে নিয়ে নানা নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করে। তার পুরস্কারের মনোনয়ন নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্ন। এরপরই তার নাম বাদ নিয়ে সংশোধিত নতুন তালিকা ঘোষণা করা হয়।

এদিকে আমির হামজার বিষয়ে খবর নিয়ে ‘বাঘের থাবা’, ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ ও ‘একুশের পাঁচালি’ নামে তার তিনটি বইয়ের হদিস পাওয়া যায়।

জন্মস্থান মাগুরায় তাকে ‘চারণ কবি’ হিসেবে চিনতেন অনেকে। কেননা তিনি গানের আসরে বসে গান লিখতেন, সুর করতেন। ‘১৯৭০ সালের’ নির্বাচনে আমির হামজা আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচার চালিয়েছিলেন বলে স্থানীয়দের কথায় উঠে আসে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে, ১৯৭৮ সালে একটি খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আমির হামজা।

বিচারিক আদালতের রায়ে ওই মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা হলেও পরে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ সাধারণ ক্ষমা পান তিনি।
আমির হামজার ছেলে আছাদুজ্জামান সরকারি কর্মকর্তা। খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন তিনি।

২০১৯ সালে মারা যাওয়া আমির হামজাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ছেলের তৎপরতার কথাও আসে সংবাদ মাধ্যমে।

এ বিষয়ে ‘জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমীর হামজার বিষয়ে অসত্য তথ্য, মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়েছে। অনেক তথ্য গোপন করে দিয়েছে, যখন আমাদের কাছে সাবমিট করেছেন। তবে কী ধরনের ‘ভুল’ তথ্য দেয়া বা ‘তথ্য গোপনের’ ঘটনা ঘটেছে, কারা এর সঙ্গে জড়িত, সেসব বিষয় স্পষ্ট করেননি তিনি।