অটোচালক হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

mamla rai

খুলনায় মাহিন্দ্রচালক শেখ ওহিদুর রহমান রিপন হত্যা মামলায় আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার ইলচ্চা বাজার সাদির চর গ্রামের ইব্রাহিম খলিলুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ নূর ইসলাম, একই এলাকার হরিদাসের ছেলে জনি দাস,

চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার ফল সমস্যা বাজার এলাকার আব্দুর রউফ শিকদারের ছেলে মো. রনি শিকদার ও খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ মাসুদ রানা মোল্লা।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী শুভেন্দু রায় চৌধুরী। তিনি জানান, আসামিদের মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও মামলার বিভিন্ন ধারায় বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির রায় ঘোষণা করেছে আদালত।

এর মধ্যে দস্যুতার অভিযোগে প্রত্যেকের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড।

এছাড়া লাশ গুমের অপরাধে প্রত্যেককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী সাব্বির আহমেদ জানান, ওহিদুর রহমান রিপন একজন মাহিন্দ্রা চালক। তিনি সাতক্ষীরা জেলার লাবশা এলাকার শেখ তৌহিদুর রহমানের ছেলে।

২০১৬ সালের ১১ জানুয়ারি সকালে গাড়ি চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে বাড়ি ফিরে না আসলে পরিবারের মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়েন।

পরেরদিন নিহতের ছোটভাই জানতে পারে খুলনা মহালবণচরা থানার ডা. দিপু সাহেব নামে একব্যক্তির জমিতে একজন মাহিন্দ্রচালকের লাশ পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে নিহতের ভাই খুলনায় এসে তার লাশ শনাক্ত করেন।

লাশ দাফন শেষে তিনি জানতে পারেন, পুলিশ গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি থেকে মাহিন্দ্রাসহ চারজন আটক করেছে। পরের দিন তিনি লবণচরা থানায় এসে চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

আইনজীবী সাব্বির আহমেদ ঘটনার বিবরণ দিয়ে আরও বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উল্লিখিত আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মাহিন্দ্রা ছিনতাইয়ের লক্ষ্যে খুলনায় আসার জন্য ৭০০ টাকা ভাড়ার চুক্তিতে রওনা হয়।

রাত নয়টার দিকে নগরীর লবণচরা থানার ডা. দিপু সাহেবের জমির নিকট পৌঁছালে আসামি মাসুদ ও রনি রশি দিয়ে ড্রাইভারের শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে।

শ্বাসরোধে তার মৃত্যু না হলে নূর ইসলাম রিপনকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা লাশ ওইস্থানে ফেলে মাহিন্দ্রা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি পুলিশের চেকপোস্টে গিয়ে তারা আটক হয়।

একপর্যায়ে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশের নিকট স্বীকার করে। পরে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী চারজনকে অভিযুক্ত করে করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।