নাকানোর আবেদন খারিজ

high-court

সন্তান ইস্যুতে স্বামী ইমরান শরিফের বিরুদ্ধে জাপানি নারী এরিকো নাকানোর আদালত অবমাননার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি নুরুজ্জামান বলেন, ‘এসব আবেদন করে সময় নষ্ট করবেন না।’

পরে আদালত এরিকো নাকানোর করা দুটি আবেদন খারিজ করে দেয়।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আহসানুল করিম, আজমালুল হোসেন কিউসি ও শিশির মনির। অন্যদিকে ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও রাশনা ইমাম।

গত ১৭ মে গ্রীষ্মকালিন ছুটিতে দুই মেয়েকে নিয়ে জাপান যেতে আপিল আবেদন করেন জাপানি মা এরিকো নাকানো।

মঙ্গলবার তার আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী শিশির মনির।

তিনি জানান, দুই কন্যার গ্রীষ্মকালিন ছুটিতে জাপান ভ্রমণের অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ওই মা।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়েছে।

এ ছাড়া দুই কন্যার বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে গতকাল আবেদন করেন মা। সেই আবেদনের শুনানির জন্য আগামী সোমবার তারিখ ঠিক করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।

এর আগে ১৫ ডিসেম্বর সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চের দেয়া আদেশে বলা হয়েছিল দুই শিশু ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে।

ওই বেঞ্চ ১২ ডিসেম্বর সকালে দুই দিনের জন্য শিশু দুটিকে মায়ের কাছে দিতে বলেছিল। ওই দিন রাত ১০টার মধ্যে মায়ের কাছে দেয়ার কথা থাকলেও দেননি বাবা।

এই নির্দেশনা না মানায় পরের দিন ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন মা এরিকো। দুই শিশুসহ বাবাকে ডেকে পাঠায় আপিল বিভাগ। সবার বক্তব্য শোনে সর্বোচ্চ আদালত।

নির্দেশনা অনুযায়ী মায়ের কাছে না দেয়ায় বাবার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে দ্রুত শিশু দুটিকে মায়ের কাছে দিতে বলা হয়।

গত ১৯ আগস্ট বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক স্বামী শরীফ ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই কন্যাসন্তানকে ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন জাপানি নারী এরিকো।

রিটের দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২১ নভেম্বর রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, দুই কন্যাকে বাবার কাছে রেখে মা বছরে তিনবার ১০ দিন করে দেখা করতে পারবেন। আর এ জন্য মায়ের সব খরচ বাবাকে বহন করতে হবে।

হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধেই আপিল করেন মা।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানের এরিকো ও বাংলাদেশি আমেরিকান ইমরান শরীফ জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে তারা তিন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তারা হলো জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা।