হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, ভাঙচুর

 

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ৪টি হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দুই দফায় এই সংঘর্ষ ঘটে। এই ঘটনায় ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

 

শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পূর্বের কোনো ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি-২ হলের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আনজারুল ইসলামকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৮ থকে ১০ জন শিক্ষার্থী মারধর করে। এতে ওই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হলে তাকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

 

 

ঘটনা জানাজানি হলে পরে ওই ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী শেখ রাসেল হলে আশ্রয় নেয়। এ সময় ডরমেটরি-২ হলের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে শেখ রাসেল হলে গেলে উভয় হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের থামায়। পরে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়।

 

 

 

মীমাংসা শেষের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একজন শিক্ষার্থী ডরমেটরি-২ এর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ডরমেটরি-২ হলের শিক্ষার্থীরা তাকে চরথাপ্পড় দেয়। পরে শেখ রাসেল হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা ডরমেটরি-২ আবাসিক হলের ভেতরে প্রবেশ করে লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া দেয় এবং ভাঙচুর চালায়।

 

 

পরে ডরমেটরি-২ ও তাজউদ্দিন আহমদ হলের শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হলে আক্রমণ করে। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ভেতরে ভাঙচুর চালায়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে। পরে তারা হল থেকে বেরিয়ে যায়।

 

সংঘর্ষের সময় ওই ৪টি হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কেন এই সংঘর্ষ তা জানতে এবং এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এই ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধান করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বিধান চন্দ্র হালদারকে। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন প্রদান করবে।

 

 

 

জানা যায়, ডরমিটরি-২ এর কিছু সংখ্যক ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় তারা প্রথমেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে হামলা করে, পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় ৪ নেতা, হাজী মোহাম্মদ দানেশের ছবিতে আঘাত করে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে লাঠিসোঁটা দিয়ে আঘাত করায় টাইলসের কিছু অংশ ভেঙে যায়। প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় নেতাদের ছবিতেও আঘাত করে ছিঁড়ে ফেলা হয়।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মেয়েকে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মামুনুর রশিদ বলেন, ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।