বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে ৮ প্রস্তাব

electricity

বিদ্যুৎ খাতে ‘চুরি, দুর্নীতি, সিস্টেম লস ও সরকারের আত্মতুষ্টির খেসারত’ দেশবাসীকে দিতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে আটটি প্রস্তাবনা দিয়েছে দলটি।

বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।

দেশে বিদ্যুতের ভয়াবহ ঘাটতিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতিতে সাইফুল হক বলেন, ‘দেশজুড়ে মারাত্মক লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের অতিকথন ও আত্মতুষ্টির খেসারত দিতে হচ্ছে দেশের মানুষকে। সরকারের ভুল নীতি, জ্বালানি খাতে চুরি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সিস্টেম লসের কারণে আজ বিদ্যুতের এই বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা দম্ভ করে বলে আসছিলেন যে, শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করে লোডশেডিং তারা জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘কেবল ইউক্রেনের যুদ্ধ বা আন্তর্জাতিক বাজারের কথা বলে মারাত্মক বিদ্যুৎ ঘাটতির এই দায় এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। বিদ্যুৎ ঘাটতির এই পরিস্থিতি চলতে দিলে শিল্প উৎপাদন থেকে শুরু করে জরুরি সেবা খাতেও বড় সংকট দেখা দেবে।’

সাইফুল হক বিদ্যুৎ খাতে সংকট উত্তরণে জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে পার্টির পক্ষ থেকে ৮ দফা প্রস্তাবনা দেন বিবৃতিতে।

১. বিদ্যুৎ খাতে ‘চুরি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সিস্টেম লস’ কমাতে জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

২. চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিতে না পারলে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দিয়ে বিশাল অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় করা এবং সে অর্থ বিদ্যুৎ পেতে অন্যত্র ব্যয় করা।

৩. জরুরি ভিত্তিতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং তার জন্য এই খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ নিশ্চিত করা।দেশের বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর দ্রুত সংস্কার করে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা।

৪. গ্যাস ও তেল উত্তোলনে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং এক্ষেত্রে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার প্রদান করা।

৫. রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি পেতে কূটনৈতিক উদ্যোগসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা।উচ্চ দামের স্পট মার্কেটকে কেবল শেষ ব্যবস্থা হিসেবেই কাজে লাগানো।

৬. সরকারি-বেসরকারি অফিস, সুপার মার্কেট, পরিবহণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসির সীমিত ব্যবহারসহ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ করা।পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের আলোকসজ্জা বন্ধ করা।

৭. শিল্প উৎপাদন, হাসপাতালসহ জরুরি পরিষেবাগুলো লোডশেডিংয়ের বাইরে রাখা।

৮. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় আশু, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অবিলম্বে জাতীয় কমিশন গঠন করা।

বিবৃতিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশা করেন, সরকার পার্টির প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেবে এবং সংকট উত্তরণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে।