চাল আমদানিতে স্বস্তি ফিরছে বাজারে

দেশের বাজারে মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সম্প্রতি চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। ইতিমধ্যে আমদানি শুরু হওয়া চালের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহে দেশের প্রধান এই খাদ্যপণ্যের দাম আরও কমবে বলে আশা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

রোববার (১৭ জুলাই) দীর্ঘ ১০ মাস পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। এই বন্দর দিয়ে ৫১২ টন চালের চালান দেশে প্রবেশ করে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার আ. রশিদ মিয়া এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ১৪ ট্রাকে ৫১২ টন চাল আমদানি হয়েছে। আমদানি করা চাল বন্দর থেকে দ্রুত খালাস করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল আমদানি শুরু হওয়ায় ইতিমধ্যে বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবে ২৭ শতাংশ শুল্ক রাখায় মোটা চাল বেশি আমদানি হবে না। ফলে বাজারে প্রভাব পড়ার আশা কম।

বর্তমানে দেশে চালের বাজারের অবস্থা স্থিতিশীল। গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে চালের দাম দু-চার টাকা করে কমেছে। জানাগেছে, যারা কারসাজি করতে চেয়েছিলেন তারাও আমদানির তথ্য জেনে বাজারে চাল ছাড়তে শুরু করেছেন।

এদিকে, রোববার (১৭ জুলাই) চাল আমদানির জন্য আবেদনের শেষ দিন ছিল। ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ লাখ ১০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এ পর্যন্ত ইমপোর্ট পারমিশন (আইপি) ক্লিয়ারেন্স নেওয়া হয়েছে ৪ লাখ টনের বেশি। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারত থেকে ১১শ টন চাল ভোমরা ও বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

এবিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন বলেন, চাল আমদানি শুরু হয়েছে। যার প্রভাব বাজারে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে কী পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে, তার নির্দিষ্ট তথ্য জানাতে পারেননি তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা তাদের হিসাব মতো আমদানি করেন। আমদানির জন্য অনুমোদিত পরিমাণের অর্ধেক চালও যদি আসে, সেটাও ৪ লাখ টনের মতো হয়ে যাবে। তবে এটা আমদানিকারকদের বিষয়।

তবে প্রত্যাশিত মাত্রার চাল আমদানি না হলে তার প্রভাব বাজারে পড়বে না বলে মনে করছেন দেশের শীর্ষ আমদানিকারকদের একজন চিত্ত মজুমদার। তার প্রতিষ্ঠান মজুমদার প্রডাক্টস ৮ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মো. মতিয়ার রহমান জানান, দেশে উৎপাদিত চালের বাজার মূল্য নিশ্চিত করতে গত বছরের ৩১ আগস্ট ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ করে দেয় সরকার। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন স্থানে বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতিতে চালের মূল্য বেড়ে যায়। তাই চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয় শর্ত সাপেক্ষে গত ৩০ জুন দেশের ৯৫ জন আমদানিকারককে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় চাল আমদানি শুরু হয়েছে।