পুলিশের গুলিতে শিশু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল গণনা শেষে দুপক্ষের উত্তেজনার জেরে সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের গুলিতে সুরাইয়া আক্তার নামে এক আট মাস বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিশুটি মীরডাঙ্গী গ্রামের ফেরিওয়ালা বাদশা ও মিনারা বেগমের তৃতীয় সন্তান।

তাৎক্ষণিকভাবে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার।

নিহত শিশুটির চাচা মাসুম পারভেজ বলেন, আমার ভাইয়ের বউ তার ছোট মেয়েকে নিয়ে বাড়ির বাইরে ছিল। মেয়েটি তার কোলে ছিল। সেখানেই পুলিশের গুলিতে ভাজতির মৃত্যু হয়।

নিহত শিশুটির মা মিনারা বেগম বলেন, আমি আমার মেয়েকে নিয়ে বাড়ির পাশের গলিতে দাড়িয়ে ছিলাম। একটু পর পুলিশের গুলি আমার মেয়ের মাথায় এসে লাগে। আর মাথার খুলি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

জেলা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নির্বাচনে কেন্দ্রের ফলাফল শেষে যখন তারা কেন্দ্র ত্যাগ করছিলো তখন পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা আমাদের মোবাইল টিম ও সদর সার্কেলের ওপর অ্যাটাক করে। কিছু সময় অতিক্রম হওয়ার পর পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে যায়। এসময় পুলিশ সদস্যদের ওপর তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে। এতে পরিবেশ আরও খারাপ হওয়ায় জানমালের রক্ষার্থে পুলিশ ৪ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়ে।

ঘটনায় এক আট মাস বয়সী শিশু মারা যায়। কিভাবে শিশুটি মারা গেল এটি এখনও জানা যায়নি। তাই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর নিহত শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর পাঠানো হবে। তারপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে দাফন কার্য সম্পন্ন করা হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আসলে দুঃখজনক। সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আমরা তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে তারা রিপোর্ট জমা দিবেন। শোক সমাপ্ত পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদেরকে সকল সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।