শিক্ষিকার ‘রহস্যজনক মৃত্যু’: স্বামী মামুনকে আদালতে পাঠানো হচ্ছে

নাটোরের কলেজশিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী মামুন হোসেনকে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে মামুনের কাছ থেকে সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়ায় সন্দেহভাজন হিসেবে সোমবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

এদিকে, রোববার ১৪ আগস্ট রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য খায়রুন নাহারের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামারনাচকৈড় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসিম উদ্দিন আজ সকাল ১১টায় ইত্তেফাককে বলেন, ‘শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের মৃত্যুর বিষয়ে নাটোর সদরের বলারিপাড়ার নান্নু মোল্লা ম্যানশনের মালিক এবং প্রহরী নিজাম উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তা-ছাড়া ওই ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ফুটেজও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’

ওসি বলেন, ‘নিহত শিক্ষিকার স্বামী মামুন হোসেনকে সোমবার সকালেই আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু তার কাছ থেকে সন্তোষজনক তথ্য পাওয়া যায়নি। একারণে মামুনকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সন্দেহভাজন হিসেবে ফিফটি ফোর-এ আদালতে প্রেরণ করা হবে। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনো উদঘাটন হয়নি। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ প্রযুক্তিগতভাবে তদন্ত করছে।’

মায়ের মৃত্যু নিয়ে খায়রুন নাহারের ছেলে সালমান আজ বলেন, ‘দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ ছিল। গত ১২ আগস্ট আবারও যোগাযোগ শুরু হয়। ওই দিন মা বলেন, মামুনকে চার মাসের মধ্যে দুইটি মোটরসাইলকেল কিনে দিয়েছেন। সবশেষ ৮দিন আগে ১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন।’

ছেলে আরও বলেন, ‘মাকে টাকার জন্য শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতেন মামুন। হত্যা বা আত্মহত্যা যাই হোক তার জন্য দায়ী মামুন হোসেন। তার বিচার দাবি করছি।’

প্রসঙ্গত, ছাত্রকে বিয়ে করা খায়রুন নাহার (৪০) নামের ওই শিক্ষিকার লাশ ভাড়া বাড়ি থেকে গতকাল রোববার সকাল ১১টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় স্বামী মামুন হোসেনকে নিরাপত্তাজনিত কারণে নাটোর সদর থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।

সেই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার, থানা হেফাজতে স্বামীসেই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার, থানা হেফাজতে স্বামী
এদিকে, দীর্ঘ প্রেমের পর শিক্ষিকা-ছাত্রের বিয়ের বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। সম্প্রতি বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিয়ের বিষয়টি আলোচনার পাশাপাশি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। একারণে ওই শিক্ষিকা তার স্বামী মামুনের সঙ্গে নাটোর সদরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেন।

নিহত খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামারনাচকৈড় মহল্লার খয়বর আলীর মেয়ে। তিনি খুবজিপুর এমহক কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। স্বামী মামুন হোসেন উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পলশুড়া-পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি নাটোর এনএস কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।