যশোরে ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনে র্শীষে রয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর

ইউরিয়া সারের মূল্য বৃদ্ধির সুযোগে ভেজাল দস্তাসার ব্যবসায়ীরা কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে অবাধে নূন্যতম উপাদান দিয়ে তৈরী করেছে ভেজাল দস্তাসার। অর্থলোভী পুলিশ কর্তা ও সদস্যদের ম্যানেজ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের নাকের ডগায় তৈরী করছে দস্তাসার নামক উপাদান। স্থানীয় লোকজন ভেজাল দস্তাসার উৎপাদন দেখে হতবাক হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি উৎপাদনকৃত ভেজাল ও নিন্মমানের দস্তাসার একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহ করা হচ্ছে অভিযোগ উঠেছে।
ভেজাল দস্তাসার তৈরীর এক মাত্র ইউনিয়ন নামে খ্যাত যশোর সদরের ৪ নং নওয়াপাড়া ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনে পারদর্শী। দু’জন ব্যক্তি নিজেদের কারখানায় সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীদের সাথে টেবিলের নীচের সম্পর্কে রেখে কাগজপত্র তৈরী করে অনিয়ম তান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভেজাল দস্তাসার তৈরী করে নিজেদের আসল ও খাঁটি সার ব্যবসায়ী হিসেবে জাহির করছে। এই দু’জন ব্যক্তির মধ্যে একজন বর্তমানে যশোর শহরের জেলরোডের বাসিন্দা স্থায়ী বাড়ি সদর উপজেলার ৪ নং নওয়াপাড়া ইউনিয়নের আড়পাড়া সাহাপুরের শহিদুল ইসলাম। অপরজন ঘুরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে শহরের আরএন রোডস্থ নতুন বাজার এলাকায় দু’টি আলিশান বাড়ির মালিক রাজু আহমেদ। এ দু’জনের মধ্যে রাজু আহমেদ এর এআর এগ্রো কেমিক্যাল নামক সার কারখানা অপরজন শহিদুল ইসলামকের সুফলা এগ্রো কেমিক্যাল সাহাপুর আড়পাড়া এলাকায় অবস্থিত। শহিদুল ইসলাম ও রাজু আহমেদ নিজেদের সারকার খানায় তৈরীকৃত ভেজাল দস্তাসার আসল হিসেবে জাহির করে। অথচ তালবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত ইনচার্জসহ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সাথে প্রতিমাসে যোগাযোগ করেন। যাতে তারা কোন ঝামেলা না করেন। এই দু’জন তাদের কারখানায় উৎপাদনকৃত দস্তাসার দেশের নামী দামি কোম্পানীর মোড়ক ছাপিয়ে তার মধ্যে পুরে তাদের নিজেদের পরিবহনের মাধ্যমে সরবরাহ করে থাকেন।

এই দু’জনের কারখানায় বছর কয়েক যাবত র‌্যাব ও ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে কয়েক লাখ টাকা জরিমানা ও হাতে হ্যান্ডকাপ পরানোর রেকর্ড রয়েছেন বলে এলাকাবাসীর অজানা নয়। সংবাদকর্মীরা এ দু’জনের কাছে তাদের কারখানায় তৈরীকৃত ভেজাল দস্তাসারের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন করলে তারা উচ্চস্বরে বলেন তাদের সরকারী দপ্তরের অনুমতি পত্র রয়েছেন দস্তাসার উৎপাদনের জন্য। এর মধ্যে শহিদুল ইসলাম সংবাদ কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেন তার অত্যাধুনিক মানের একটি ল্যাব রয়েছেন।

যে ল্যাবের মাধ্যমে তৈরী করা হচ্ছে দস্তাসার। যে সার তিনি আসল বলে দাবি করেন। তার সার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করলে যে পরিমান পারসেন্ট থাকা প্রয়োজন তা নাই। তারপরও তিনি তার সার কারখানায় উৎপাদনকৃত দস্তাসার আসল বলে দাবি করেন। অপরদিকে, এই ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে আরো বেশ কয়েকজনের সার কারখানা। যাদের ইতিপূর্বে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা ও র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্প সমন্বয় গঠিত টিম অভিযান চালিয়ে সীলগালা করে দিলেও তারা ভেজাল দস্তাসার তৈরী চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। যার ফলে ভেজাল দস্তাসার তৈরীর জন্য এই ইউনিয়নে গত বছর ও চলতি বছরে চারটি ভেজাল দস্তাসার কারখানায় অভিযান চালিয়ে সীলগালা করে দেন উপজেলা কৃষি অফিস। এক দিকে সীলগালা অপরদিকে,পুনরায় ভেজাল দস্তাসার তৈরী স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। শুধু সিলগালা নয়।

ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনের জন্য সারখানার সরাঞ্জাম পর্যন্ত জব্দ করে নিয়ে গেলেও পুনরায় স্থাপন করা হয় ভেজাল দস্তাসার তৈরীর সরাঞ্জাম। সূত্রগুলো বলেছেন,মাস কয়েকপূর্বে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা এই ইউনিয়নের ইবাদুলের ভেজাল দস্তাসার কারখানায় অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দ ও সীলগালা করে দেয়। একই ইউনিয়নের আড়পাড়া জুনায়েদ এর বাগানে আজিজুল ইসলামের ভেজাল দস্তাসার কারখানায় উপজেলা কৃষি অফিসার অভিযান চালিয়ে সার তৈরীর সরাঞ্জাম জব্দসহ সীলগালা করে দেয়। সীলগালা ও মালামাল জব্দ করলেও আজিজুল পিছন থেকে ঢুকে নতুন করে সার তৈরীর সরাঞ্জাম স্থাপন করে পুনরায় ভেজাল দস্তাসার উৎপাদন করে যাচ্ছে। আজিজুল ইসলামের ক্ষমতা দেখে স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দারা হতবাক হয়ে বলাবলি করছে তালবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্প ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ রেখে আজিজুল ইসলাম তার ভেজাল দস্তাসার উৎপাদন করে দেশের মাটির বারো বাজাচ্ছে। এ ব্যাপারে যশোরের পুলিশ সুপারসহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন।