জাতীয় সম্মেলন জাঁকজমক করছে না আওয়ামী লীগ

অর্থ সাশ্রয়ের জন্য বর্ণাঢ্য আয়োজন থাকছে না আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে কম খরচে এই সম্মেলন আয়োজনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তবে সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন রেকর্ড সংখ্যক কাউন্সিলর-ডেলিগেট। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। জাতীয় সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকা হবে।

আগামী ডিসেম্বরে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সম্মেলন কার্যক্রম ছাড়া কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তুতি এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি। এই অবস্থায় মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্মেলন-সংক্রান্ত কিছু সাংগঠনিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এবং উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।

তাঁদের কয়েকজন সমকালকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বমন্দা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সময়ে অর্থনৈতিক সাশ্রয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এ কারণে অর্থ সাশ্রয়ের দিকে খেয়াল রেখে জাতীয় সম্মেলনে বর্ণাঢ্য আয়োজন না করার তাগিদ দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক।

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ঘিরে সব সময়ই এক ধরনের উৎসবের আমেজ থাকে। দলের কাউন্সিলররা জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দলের নতুন কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচন করেন। কিন্তু এবারকার সম্মেলনে এই ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম হবে। কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন, জাতীয় সম্মেলনে রেকর্ড সংখ্যক কাউন্সিলর-ডেলিগেটের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে। তবে তুলনামূলক বিচারে খরচ কম করা হবে। তেমন একটা সাজসজ্জা, জাঁকজমক আলোকসজ্জা কিংবা অন্য কোনো ধরনের বর্ণাঢ্য আয়োজনের ব্যবস্থা থাকবে না।

নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এসব বিষয়ে খুবই সজাগ থাকার তাগিদ দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি একই সঙ্গে আগামী সাত দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের এজেন্ডা নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য সংশ্নিষ্ট নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে বিভিন্ন উপকমিটি গঠনের বিষয়ে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া দলের দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদককে সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

নেতারা জানিয়েছেন, জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে কমপক্ষে ১০টি উপকমিটি গঠনের প্রস্তুতি রয়েছে। এর মধ্যে প্রথা অনুযায়ী, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। সদস্য সচিব হবেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া ঘোষণাপত্র, দপ্তর, প্রচার প্রকাশনা, স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা, মঞ্চ ও সাজসজ্জা, গঠনতন্ত্র, সাংস্কৃতিক, খাদ্য এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটি গঠন করার উদ্যোগ রয়েছে। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এই উপকমিটিগুলো গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে গতকাল ঢাকা বিভাগের চারটি জেলার সম্মেলন কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেছেন দলের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। আগামী ২৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ, ২৪ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ মহানগর, ২৯ অক্টোবর ঢাকা এবং ৫ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।