বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে যশোরে আতঙ্ক, খুলনাগামী বাস চলাচল বন্ধ

খুলনায় বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে যশোরের নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সেই সাথে রয়েছে মামলার ভয়। সমাবেশের পর নেতাকর্মীরা আবারও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হবেন অনেকেই। আবার অনেক নেতাকর্মীর নামে রয়েছে, একাধিক নাশকতা মামলা।

এদিকে, যশোরের সব রুটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও খুলনাগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় ও দুরপাল্লাসহ সব রুটেই যাত্রীবাহী ও অন্যান্য ছোট-বড় যানবাহন সময় মেনেই ছেড়ে যাচ্ছে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। তবে খুলনায় পরিবহন ধর্মঘটের কারণে কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী বাসগুলো যশোর বাস টার্মিনাল পর্যন্ত চলাচল করছে। আর এতে দুর্ভোগে পড়েছেন খুলনাগামী যাত্রীরা। যশোর থেকে খুলনাগামী সব যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তবে খুলনায় মহাসমাবেশে যোগ দিতে জেলা বিএনপি যশোর থেকে ৫০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে যাওয়ার টার্গেটে মাঠে নামলেও শঙ্কায় রয়েছেন কর্মীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজ ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির মহাসমাবেশ। দলটির টার্গেট যশোর থেকে অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী পাশের জেলার এ সমাবেশে যোগ দেবেন। এজন্য যশোরের বিভিন্ন হাট-বাজারে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন।

বিএনপির অভিযোগ, মহাসমাবেশ বাঁধাগ্রস্ত করতে অপকৌশল নিয়েছে সরকার। তারা দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। গত তিন দিনে অভিযান চালিয়ে বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বিএনপির সমাবেশ বানচাল করতে এই পরিবহন বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে খুলনায় বাস প্রবেশ না করতে পারায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন অনেক যাত্রী। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, ফরিদপুর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর থেকে যশোরে এসে বাস থেকে নেমে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। এরপর বিভিন্নভাবে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এতে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের।

খুলনা থেকে যশোর এসে মহা বিপদে পড়েছে আরিফ বিল্লাহ। যশোরে আত্মীয় বাড়ি এসে ফিরে যেতে ভোগান্তিতে পড়েন তিনি। তিনি বলেন, আমাকে যেভাবেই হোক বাড়ি পৌছাতে হবে।

খুলনাগামী যাত্রী আরিফুল ইসলাম বলেন, ধর্মঘট ডাকা মানেই আমাদের দুর্ভোগ। বাস মালিক সমিতি কিংবা রাজনৈতিক দল হোক বা সংগঠনই হোক তারা ধর্মঘট ডেকে বসে থাকে কিন্তু আমাদের কথা ভাবে না। এভাবে তো সব চলতে পারে না।

পরিবহনের চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএনপির সমাবেশের জন্য ধর্মঘটের কারণে যশোর বাস টার্মিনাল পর্যন্ত আসতে পারছে কুষ্টিয়ার পরিবহনগুলো। এরপর আর কেউই যেতে পারছে না।

যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, আমরা খুলনার সমাবেশে ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে নিয়ে যেতে প্রস্তুতি নিয়েছি। মহাসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে নেতাকর্মীদের আটক করেছে। কিন্তু এতে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে না।

তিনি বলেন, গণসমাবেশ বানচাল করতে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে গণগ্রেফতার চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতংক তৈরি করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন এই নেতা।

যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু জানান, একটা দলের বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে নানা ধরণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রস্তুতিসভা করতে দিচ্ছে না। পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। আবার বিএনপির কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের গ্রেফতার করছে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসাইন বলেন, পুলিশ পরিকল্পিতভাবে কাউকে গ্রেফতার করছে না। যাদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর বা অন্যান্য মামলা রয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।