রাজবাড়ীর বহরপুরে নৌকা সম্বলিত খাট তৈরী করে সাড়া ফেলেছে মিস্ত্রী আশোক আলী

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করে দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম এর মাধ‍্যমে সম্পূন মেহগনি কাঠে নিজের হাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতীয় প্রতীক নৌকা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন খাট তৈরী করে এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন এক পরিশ্রমী কাঠ মিস্ত্রী।

তার এই স্বপ্নের খাটটি দেখতে আশপাশের এলাকার লোকজন ভীর করছেন তার দোকানে। এই দৃষ্টিনন্দন নৌকা সম্বলিত খাটটি তৈরী করেছেন রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর গ্রামের মোঃ সোহাগ আলী শেখের ছেলে দরিদ্র কাঠ মিস্ত্রী মোঃ আশোক আলী শেখ ও তার সহযোগী। তাদের এই খাটটি নির্মান করতে সময় লেগেছে আড়াই থেকে তিন মাস।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধায় তাঁর জাতীয় প্রতীক নৌকা সম্বলিত একজ মেহগনি কাঠ দিয়ে তাতে মনের মাধুরী মিলিয়ে তৈরী করেছেন নজরকারা দৃষ্টিনন্দন খাট। সম্পূর্ণ বক্সখাটের সাথে নৌকা খোদাই করি একটি টুলবক্স। খাটটি পরিপূর্ণরূপ দেওয়ার পর রংয়ের আঁচরে আরো সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন শৈল্পীক কারুকাজে। যা দেখতে বহরপুরের পলাশ মার্কেটে ভীর জমাচ্ছেন অনেকেই। তার এই কাজ দেখে খুশি এলাকার আওয়ামী লীগ সমর্থিত জনগণ। শনিবার ২৯ অক্টোবর বিকালে কথা হয় বহরপুরের দৃষ্টিনন্দন খাট তৈরীর কারিগর কাঠ মিস্ত্রী মোঃ আশোক আলী শেখের সাথে।

তিনি জানান, আমি বিভিন্ন সময় রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, ঢাকাতেও ফার্নিচারের কাজ করেছি। আমার স্বপ্ন ছিলো আমি এমন কিছু তৈরী করবো যাতে মানুষ নতুন কিছু দেখতে পায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে মনেপ্রাণে ভালোবাসি। আমি একজন নগণ‍্য মানুষ। কোন রকমে দিন আনা দিন খাওয়ার মধ‍্যদিয়ে সংসার চলে। এরই মধ‍্যে মাথায় আসে আমি আমার দলের জাতীয় প্রতীক সম্বলিত একটি নান্দনিক খাট তৈরী করবো। কিছু গচ্ছিত টাকা দিয়ে প্রথমে কাঠের কারবারিদের নিকট থেকে কাঠ সংগ্রহ করি। পরে ধীরে ধীরে তা দিয়ে আমার কাজ শুরু করি। আমি আর আমার সহযোগী মিলে আড়াই থেকে তিন মাস রাত দিন মিলে পরিশ্রম করে কাঠে নিজের হাতে খাটের চারপাশে আমার প্রাণের প্রতীক নৌকা খোদাই করে এটি তৈরী করি।

বক্সের চারপাশ খাটের মাথার দিকে মিলে বেশ কয়েকটি নৌকা খোদাই করে খাটের কাজ শেষ করি। খাটের সম্পূর্ণ কাজ হওতার পর ঘষামাজা করে কাঠের গাঁয়ে খোদাই করা নৌকাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। এরপর কফি কালারের উপর সোনালী রংদিয়ে নৌকা প্রতীকগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলি। যা দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক আসছে। খাটটি নির্মান করতে সর্বসাকুল্লে আমার ৭০ হাজারের কিছু বেশি খরচ হয়েছে। প্রথমে আমি চিন্তা করেছিলাম এটি নিজের জন‍্য রেখে দেবো। কিন্তু আমি একজন দরিদ্র দিনমজুরী শ্রমিক। আমার পক্ষে রাখা সম্ভব নয়। তাই এটা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিলে বঙ্গবন্ধুর কোনো সৈনিকের নিকট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সৌখিন ব‍্যাক্তিরা এটা নিতে পারেন।খাটটি দেখতে আসা দর্শনার্থী পাবনা জেলার সুজানগরের মোঃ শাহাদৎ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার অল্প বয়সে অনেক নন্দিত জিনিস দেখেছি।

তবে এই খাটটি আমার নিকট নতুন কিছু মনে হয়েছে। বহরপুরের কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, মিস্ত্রী আশোক আলী শেখ আগে থেকেই সৌখিন। তিনি নৌকা সম্বলিত যে খাটটি তৈরী করেছেন তা প্রসংশার দাবিদার। সে দরিদ্র হয়েও বঙ্গবন্ধুর প্রতি যে ভালোবাসা তার কাজের মধ‍্যদিয়ে দেখিয়েছেন এটা অনেক বড় কিছু। তাকে সহানুভূতি দেখালে সে আরও ভালো কিছু উপহার দিতে পারবে। বহরপুর ইউনিয়নের ১,২ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস‍্য মোছাঃ শিরিনা আক্তার বিউটি বল্রন, কাঠমিস্ত্রী আশোক আলী শেখ বহরপুর গ্রামের সোহাগ আলী শেখের ছেলে।

সে কয়েক মাস আগে এই খাটটির কাজ শুরু করে সম্প্রতি শেষ করেছে। তার যে এমন প্রতিভা আছে তার তৈরী এই খাট না দেখলে জানতে পারতাম না। তার এই কাজ আশপাশের মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আশা করি সে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু আমাদেরকে বানিয়ে দেখাবে।