ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচনি কর্মকর্তাদের ওপর হামলা, আহত ২৫

দিনাজপুরের বিরল পৌরসভা নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে এবং একই উপজেলার ১২নং রাজারামপুর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী শর্টগানের ৭ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিরল পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের ব্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিকাল সাড়ে চারটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এরপর ফলাফল ঘোষণা করতে দেরি হওয়ায় ভোটকেন্দ্রের আশপাশে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আরিফুর রহমান এবং মামুনুর রশিদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। পরে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ হাতে লেখা নির্বাচনী ফলাফল বিদ্যালয় ভবনের দেয়ালে টাঙাতে গেলে পরাজিত প্রার্থী মামুনুর রশিদের সমর্থকরা চিৎকার শুরু করে।

 

তারা ইভিএম মেশিন থেকে পাওয়া কপি দেখতে চায়। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান। এ সময় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা গাড়িতে ভোটের সরঞ্জামাদি তুলে চলে আসতে উদ্যত হলে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এ সময় কয়েকজন আহত হন।

 

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক সাংবাদিকদের জানান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কমিশনার (পুরুষ) পদে দুজন প্রার্থী ছিলেন। উটপাখি প্রতীকে আরিফুর রহমান পেয়েছেন ৫৩৩ ভোট এবং ডালিম প্রতীকে মামুনুর রশিদ পেয়েছেন ৪৪৫ ভোট। পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা হট্টগোল করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তারা প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করে সব মালামালসহ নিরাপদে উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্রে পৌঁছেছেন।

 

এদিকে বিরল উপজেলার ১২নং রাজারামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কানাইবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সাধারণ সদস্য পদের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ ভোটগ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী শর্টগানের ৭ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করেছে।

কানাইবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এ.এইচ.এম সালেহীন জানান, সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণার সময় সাধারণ সদস্য পদে ৩ প্রার্থীর মধ্যে পরাজিত দুই প্রার্থী ঘোষিত ফলাফল নিয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে। ফলাফল ঘোষণা করে কেন্দ্র ত্যাগ করার সময় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা তাদের কেন্দ্র ত্যাগে বাধা প্রদান করে এবং আটকিয়ে রাখে। তাদের উদ্ধারে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য সেখানে গেলে তাদেরও আটকিয়ে রাখে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ভোটগ্রহণের কর্মকর্তাসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্য আহত হয়। এ সময় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী শর্টগানের ৭ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে। প্রায় ১ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।

রাত ১১টায় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এ.এইচ.এম সালেহীন জানান, এই ঘটনায় বিরল থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

বিরল থানার ওসি রেজাউল হাসান রেজা জানান, বিরল পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড এবং রাজারামপুর ইউনিয়নের কানাইবাড়ী ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক কর্তৃক হামলা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের গাড়ী ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।