কনকনে শীতে ঝিনাইদহের জনজীবন বিপর্যস্ত, দুই দিনেও দেখা মেলেনি সূর্যের

চলতি বছরের শুরু থেকেই শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ার ফলে কনকনে শীত আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ও ঘন কুয়াশায় তীব্র শীতের কারণে ঝিনাইদহের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।গত দুই দিনেও দেখা মেলেনি সূর্যের। মঙ্গলবার ও বুধবার এ দুদিন জেলা শহরসহ আসপাশের এলাকার মানুষ সূর্যের মুখ চোখেই দেখতে পাইনি।তাই দুদিন সূর্য না ওঠাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

ভোরে জেলা শহরে কাজের সন্ধানে আসা শৈলকূপা উপজেলার ভাটই এলাকার বাবুল মন্ডল ও সদর উপজেলার দোকানঘর এলাকার লালন মন্ডল জানান, কাজের সন্ধানে জেলা শহরে এসেছি। এসে ঘন কুয়াশায় আর কনকনে শীতে কাজ না পাওয়ায় পোস্ট অফিস মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছি আমরা।অপরদিকে শহরের পাগলাকানাই মোড়ে সদরের কেশবপুর গ্রামের রতন, সবুজ ও জামিরুল এসেছে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে কিন্তু প্রচন্ড শীতের কারণে মড়ে এসে শীত নিবারণের জন্য আগুন জ্বালিয়ে একটু শীত নিবারণ করছি ।শুনেছি ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক রাতের বেলাশ কম্বল বিতরণ করছে শীতার্ত মানুষের মাঝে।

তাই আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে বলতে চাই তিনি যদি ভোরবেলা বেরিয়ে আমাদের মত নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করতেন তাহলে কিছুটা শীত নিবারণ করতে পারতাম।অপরদিকে শহরের কালিকাপুর এলাকা থেকে আশরাফুল নামের অপর শ্রমিকের সাথে কথা হলে তিনি জানান,আজ এতটাই শীত অনুভূত হচ্ছে যার কারণে ঠান্ডা লাগছে।তাই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছি। ঝিনাইদহ শহরের বুধবার সকালে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস গুগোল সার্চের মাধ্যমে দেখা গেছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বাহিরে বের হচ্ছে না। জেলা শহর ও আসপাশের এলাকাতে মঙ্গলবার ভোর থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে বেলা যতই বাড়ে ততোই শীতের তীব্রতা যেন বৃদ্ধি পায়।

এমনকি সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি কোথাও। কনকনে শীতের কারণে শহরে লোকজন একটু কম। সকাল দশটা বাজলেও সূর্য না ওঠায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে জেলার ছয়টি উপজেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহের সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়া বয়ে চলেছে সেই সাথে কুয়াশার কারণে প্রচন্ড শীত অনুভূত হচ্ছে । এ অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর থেকে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে । গরম কাপড়ের দোকানগুলোতেও ভিড় বেড়েছে। গ্রামের মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সকাল থেকে গ্রামের বাজারে লোকজনের চলাচল অনেকটা কমে গেছে।এমনকি জেলা শহরে লোকজন কম।তবে গত কয়েক দিন থেকে হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। এলাকার বেশিরভাগই খেটে খাওয়া মানুষ শীতে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে।প্রায় বাড়িতেই গরম কাপড়ের অভাব। সরকারিভাবে শীতবস্ত্র জেলা শহরে বিতরণ করা হলেও এখনো গ্রামে শীত বস্ত বিতরণ শুরু হয় নি । এলাকার মানুষ বাধ্য হয়ে খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।তাদের মতে তাদের পরিবারের সকলেই শীতে কষ্টে আছে। আমরা খড় জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।

কৃষকরা জানান, শীত বেড়ে যাওয়ায় বীজতলার বীজ নষ্ট হওয়ার আশংকা করছে কৃষকেরা। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগও বাড়ছে।ঝিনাইদহ পায়রা চত্বর এলাকা থেকে ইজিবাইক ড্রাইভার ইমরান হোসেনের সথে কথা বললে জানান ,সকালে বিষয়খালী গ্রাম থেকে ইজিবাইক নিয়ে জেলা শহরে ঘন কুয়াশার সাথে উত্তরে হিমেল হাওয়ার ভিতরেও বাইক চালিয়ে শহরে আশায় কনকনে ঠান্ডা লাগছে এর ফলে আমি ইজিবাইক চালাতে পারছি না।তবে গরীব মানুষ খরচের টাকা ভারা মারতে পারলেই দ্রুত গ্রামে ফিরে যাবো।

অপরদিকে ঢাকা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো: ওমর ফারুক জানিয়েছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতির কোনো আভাস নেই। এই সময়ের পর ঘন কুয়াশা কাটতে পারে।আর কুয়াশা কাটলেই সূর্যের দেখা মিলবে।এর আগে মঙ্গলবার শ্রীমঙ্গলে বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।বছরের শুরু থেকেই ঝিনাইদহসহ আসপাশের জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে।ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, আগামী কয়েক দিন এ ধরনের আবহাওয়া অব্যাহত থাকবে।