সংসদে বিবর্তনবাদ নিয়ে বিতর্ক

songsod

পাঠ্যপুস্তুকে ডারউইনের বিবর্তনবাদ অন্তর্ভুক্ত করার কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু। তিনি বলেন, ‘বানর থেকে মানুষ হয়, এটা ধর্মবিরোধী প্রচার। মুসলমান হিসেবে আমরা আদমের সন্তান। এখানে বানর থেকে মানুষ হওয়ার সুযোগ নেই। এটা ইসলামের প্রতি আঘাত। এ বিষয়ে ব্লাসফেমি আইন করা উচিত।’ আজ সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবে আলোচনায় এসব কথা বলেন টিপু।

শিক্ষার মান উন্নয়নের দাবি করে গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, ‘আমরা দেখলাম ডারউইন থিউরি। বানর থেকে মানুষ হয়। এটা আমাদের ধর্মবিরোধী প্রচার। আমরা মুসলমান। বিশ্বাস করি আমরা আদমের সন্তান। এখানে বানর থেকে মানুষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরা ইসলামের প্রতি আঘাত করেছে। এই দেশে ব্লাসফেমি আইন করা উচিত। জার্মানিতে ব্লাসফেমি আইন আছে। প্রয়োজন হলে তাদেরটা এনে দেখেন কিছু কাটছাট করে আমাদের দেশে যারা ধর্মবিরোধী কর্মকাণ্ড করে তাদের ব্লাসফেমি আইন করে তাদের বিচার করতে হবে। নাহয় দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে।’

গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, ‘কোনো ধর্মপ্রাণ মুসলমান এটা মেনে নেয় না। আপনাদের কাছ পর্যন্ত এ আওয়াজ আসে কিনা জানি না। আমরা বাইরে চলি, মানুষের কথা শুনি। বানর থেকে মানুষ হওয়া নিয়ে মানুষ কি বলে… মানুষ আগ্নেয়গিরির মতো অবস্থায় আছে। প্রত্যেকটা মুসলমানের ধর্মে আঘাত করেছে।’ পাঠ্যপুস্তকে কারা এসব বিতর্কিত বিষয় দিয়েছে তা বের করতে একটি কমিশন গঠনের দাবি জানান তিনি।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বলেন, ‘এই সরকারকে বিতর্কিত অবস্থায় ফেলার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করেছে। সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। কোনো শত্রুও এটা অস্বীকার করতে পারবে না। এত উন্নয়ন হয়েছে। এই পরিমাণ উন্নয়ন আগে হয় নাই। বড় কাজ করলে সমালোচনা থাকবেই। যে কাজ করে না তার সমালোচনা নাই।’

ডলারের সংকটের জন্য ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও লিজিং কোম্পানিগুলো দায়ী বলে দাবি করেন টিপু। তিনি বলেন, ‘এরা রক্ষক হয়ে মানুষের আমানত ভক্ষণ করেছেন। যোগসাজশে বিভিন্ন জায়গায় লস প্রকল্প তৈরি করেছেন। আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ডলার সংকট কেটে যাবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক এ সমস্ত তদন্ত সঠিকভাবে করছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। টিপু বলেন, ‘তারা যদি সঠিকভাবে করতো তাহলে এই দেশে এত ঋণখেলাপি হতো না। যেসব ব্যাংক ঋণখেলাপি হচ্ছে বেশি এবং ইচ্ছাকৃত যোগসাজশে ঋণ খেলাপি করছে তাদের চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সরকার কর্তৃক প্রশাসক নিয়োগ করা হোক।’

১০ শতাংশ করে বিদেশ থেকে অপ্রদর্শিত আয় দেশে আনার সুযোগ দেওয়ার পর কত টাকা দেশে ফেরত এসেছে তা জানাতে আগামী অধিবেশনে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য দাবি করেন তিনি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন জাপার এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। শীত আসলে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাদের দুই, তিন, চার হাজার কম্বল দিয়ে আসল। কোরবানি ঈদে গরু দিয়ে আসল। রোজার ঈদে প্যাকেট পাঠিয়ে দিল। এরপর এরা আর খারাপ ব্যাংকগুলোর বিষয়ে খবর রাখে না, এরা ওভারকাম করে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারও দায়দায়িত্ব এড়াতে পারে না। তাদেরও প্রশ্নের সম্মুখীন করে দোষী হলে আইনের আওতায় আনতে হবে।’

আরও বক্তব্য দেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, এস এম শাহজাদা, পংকজ নাথ, নজরুল ইসলাম বাবু, আশেক উল্লাহ রফিক প্রমুখ।