ফুলপরীর নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। হলের গণরুমে নির্যাতনের অভিযোগে গঠিত বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এ কথা। মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা প্রতিবেদনে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

তোমার হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাই, ফুলপরীকে ইবির সেই ছাত্রলীগ নেত্রী

আগের দিন সোমবার সকালে ওই শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মনিরুজ্জামান মিল্টন প্রতিবেদনটি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দেন।

ছাত্রলীগের ডাকে ক্যাম্পাসে যাননি ফুলপরী, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফুলপরীকে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কমিটিতে একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন শিক্ষককে রাখতে বলা হয়েছে। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককে ৩ দিনের মধ্যে এই কমিটি গঠন করতে বলা হয়। পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: মূল অভিযুক্ত অন্তরার সংশ্লিষ্টতা পায়নি ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি

একসঙ্গে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির রিপোর্টও ১০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলেছেন আদালত। তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত দুইজনকে ক্যাম্পাসের রাখতে বলা হয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। আদালতে ওই রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট গাজী মো. মোহসীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন।

তার ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী ও তার অনুসারীরা তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন। এ ঘটনা কাউকে জানালে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় রিট হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।