ভারতের রেল স্টেশনে চালু হলো ‘বাংলাদেশি ভিসা তথ্য কেন্দ্র’

ভারতের কোনো রেল স্টেশনে চালু হলো ভিসা তথ্য কেন্দ্র। সোমবার ভারতের কলকাতা (চিৎপুর নামেও পরিচিত) স্টেশনে চালু করা হয় ‘বাংলাদেশ ভিসা তথ্য কেন্দ্র’। ব্যবসা, পর্যটন বা অন্য যে কোনো উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে যেতে ইচ্ছুক এমন ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা আবেদন ও ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষেই তথ্য কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের আন্দালিব ইলিয়াস।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পূর্ব রেল ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগম, ডিইউ ডিজিটাল গ্লোবাল নামক একটি শীর্ষস্থানীয় ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সংস্থার চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র রাই, কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের প্রথম সচিব (প্রেস) রঞ্জন সেন, কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম, কাউন্সিলর (কনস্যুলার) এএসএম আলমাস হোসেন প্রমুখ।

ভিসা তথ্য কেন্দ্রটি উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে আরও একটি পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।এতে একদিকে যেমন ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ভিসা পাওয়া সহজ হবে, তেমনি ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে।

কলকাতায় এই ভিসা তথ্য কেন্দ্র পরিচালনা করবে ডিইউ ডিজিটাল গ্লোবাল নামক একটি শীর্ষস্থানীয় ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা। বেসরকারি এই সংস্থাটি ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে দুইটি ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু করেছে। যার একটি কলকাতার সল্টলেক সেক্টর ফাইভের সিপি ব্লক, ইনফিনিয়াম ডিজিস্পেস প্রথম তলে অবস্থিত। দ্বিতীয়টি শিলিগুড়ি, পানি ট্যাঙ্কি মোড়ের কাছে সেবক রোড, আন্তর্জাতিক মার্কেটের দ্বিতীয় তল, ৩০ ও ৩১ নম্বর শপে অবস্থিত।

সেক্টর ফাইভের বাংলাদেশ ভিসা অপারেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ সরফরাজ জানান, কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে দ্রুত ভিসা পাবেন সে ব্যাপারেই যাবতীয় তথ্য দেবে এই তথ্য কেন্দ্রটি।

বাংলাদেশ উপহাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস জানান, ‘করোনা মহামারির পর উভয় দেশে ভ্রমণকারী যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে। ফলে বাংলাদেশে যারা যাতায়াত করেন তাদের তথ্য পেতে সুবিধা হয়, সে লক্ষ্যে এ তথ্য কেন্দ্রটি খোলা হয়েছে।

কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাউন্সিলর (কনস্যুলার ভিসা) এএসএম আলমাস হোসেন জানান, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে যখন বাংলাদেশে যেতে টুরিস্ট ভিসা চালু করা হয়। তখন থেকেই ভারতীয় যাত্রীদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিমাসে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার ভিসা দেওয়া হচ্ছে। গত বছর আমরা ১ লাখ ৩০ হাজারের মত বাংলাদেশি ভিসা দেওয়া হয়েছে, যার অধিকাংশই টুরিস্ট ভিসা। এই সমস্ত যাত্রী পারাপারের ফলে রেল, পরিবহন কিংবা বিমান প্রতিটা ক্ষেত্রেই রাজস্ব আদায় হচ্ছে এবং দুই দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে।

এদিকে তথ্য কেন্দ্র খোলার প্রথম দিনেই ভিড় দেখা গেছে। উড়িষ্যার কটকের বাসিন্দা এক নারী বলেন, তার বিয়ে হয়েছে বাংলাদেশের খুলনায় এবং ট্রেনে খুলনায় যাতায়াত অনেক সহজ। তাই ভিসা পাওয়ার পদ্ধতি এবং সুযোগ সুবিধা জানতেই তিনি আজ এখানে এসেছেন।