সারা দেশে এজি অফিস সরকারি নিয়ম মেনে চললেও যশোর চলছে অন্য আইনে। জেলার এ অফিসে ইচ্ছেমত নিয়ম তৈরি করে দুর্ভোগে ফেলা হচ্ছে সরকারি চাকরিজীবীদের। এমন অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা। ৪ মাস যাবৎ তাদের উচ্চতর স্কেলের বেতন বন্ধ রয়েছে।
যশোর পৌর ভূমি অফিসে কর্মরত ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, সরকারি কোন আইনের তোয়াক্কা করছেন না জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার।
তিনি নিজের ইচ্ছেমত বেতন ফিক্সেসন করছেন এবং আবার তা বাতিলও করছেন। তিনি বলেন,সরকার গত বছর তাদের বেতন স্কেল পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেই অনুয়ায়ী সারা দেশে ভূমি সহকারী ও উপসহকারী কর্মকর্তাদের বেতনভাতা ফিক্সেসন করা হয়। সরকারি পরিপত্র অনুয়ায়ী বর্তমানে তাদের ১২ গ্রেডে বেতন-ভাতা প্রাপ্য। জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস গত সেপ্টেম্বর মাসে তাদের ১২ গ্রেডের স্কেল নির্ধারণ করে বেতন ছাড় করে।
সেই মোতাবেক তারা ৩ মাস বেতনভাতা উত্তোলনও করেন। এর পর জানুয়ারি মাসে কোন কারণ উল্লেখ না করে সর্বশেষ বেতন কাঠাম বা ফিক্সেসন বাতিল করে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)কে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে আমরা শুনেছি।এর পর থেকে তাদের উচ্চতর স্কেলের বেতন দেয়া হচ্ছে না। অর্থ ও ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের ব্যতয় ঘটিয়ে তাদের বেতন স্কেল আটকে রাখা হয়েছে ১৬ গ্রেডে। অর্থাৎ সরকার তাদের যে বেতন সুবিধা দিয়েছে তা তারা পাচ্ছেন না। অথচ যশোরের অপর ৭ টি উপজেলাসহ সারা বাংলাদেশের সকল উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ১২ গ্রেডে বেতনভাতা পাচ্ছেন।
ভূমি সহকারী ও উপ-সহকারী কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি কামিনুল ইসলাম বলেন, তাদের সাথে পুতল খেলারমত আচরণ করছে হিসাব রক্ষন অফিস। ওই অফিসে ইচ্ছেমত আইন তৈরি হয় আবার ইচ্ছেমত ভাঙ্গা হয়। উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তাদের বেতন ফিক্সেসন সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী করা হয়েছে। সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করার এখতিয়ার জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার নেই। ত্রুটি থাকলে তিনি সংশোধন করবেন কিন্ত সম্পুর্ণ বাতিল করে তিনি ক্ষমতা অপব্যবহার করেছেন। আর এত আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সদর উপজেলার ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তারা। তাদের ন্যায্য পাওনা আটকে রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমিতির অপর একজন নেতা বলেছেন,সবই টাকা নেওয়ার ধান্ধা। তিনি দাবি করেন নতুন বেতন স্কেল ফিক্সেসন করার ক্ষেত্রে ভূমি সহকারী কর্মতাদের ১০ হাজার এবং উপ-সহকারীদের কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা করে উৎকোচ নেওয়া হয়েছে। অডিটর সুমন হচ্ছে এসবের নাটের গুরু। তার কাছে ঘুষ ছাড়া কোন ফাইল নড়ে না। অনুসন্ধান করলে তার বিরুদ্ধে বেরিয়ে আসবে আরো চা ল্যকর তথ্য। তবে অর্থ নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা কবির হেসেন। তিনি দাবি করেন তার অফিসে কোন ঘুষ লাগে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্ধিত বেতন স্কেল উপসহকারী কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বিধায় তা বাতিল করা হয়েছে। তাঁর অধিনস্থ অপর ৭ উজেলায় কেন বাতিল করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি তার কোন উত্তোর দেননি।