ভোট চলছে চট্টগ্রাম-৮ আসনে, ভোটার উপস্থিতি কম

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি একেবারে কম দেখা গেছে। অনেক কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়া অন্যকোনো প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি।

সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পরপরই চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট মোড়ে এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪৮ নম্বর কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ।

এ সময় তিনি সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে উল্লেখ করেন এবং জয়লাভের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। ভোটের মাধ্যমে আবারও তা প্রমাণিত হবে।’

এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্র হচ্ছে- ১৪৭, ১৪৮ ও ১৪৯ নম্বর কেন্দ্র। ১৪৮ নম্বর কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন নোমান আল মাহমুদ। এ সময় তার সঙ্গে দলের বেশকিছু নেতাকর্মী ছিলেন।

এর ঘণ্টাখানেক পর কেন্দ্রটিতে যান ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী সেহাব উদ্দিন মোহাম্মদ আবদুস সামাদ। সুষ্ঠু ভোট হলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তবে কয়েকটি কেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকার এজেন্টরা বুথে ঢুকে ইভিএমে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে দিচ্ছেন বলে সমকালের কাছে অভিযোগ করেন তিনি। এজন্য রাবেয়া বশরী স্কুল, এনএমসি চৌধুরী স্কুল, পূর্ব ষোলশহর সরকারি প্রাথমিক স্কুল কেন্দ্রসহ আরও দুই-একটি কেন্দ্রের ভোট বাতিলের দাবি জানান।

১৪৮ নম্বর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জহির আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে। কারও পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’

সকাল ১০টার দিকে এই কেন্দ্রের ৩ নম্বর বুথে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ছাড়া অন্যকোনো প্রার্থীর এজেন্ট নেই। কোনো ভোটার বুথে ঢুকলেই কাপড় সরিয়ে ভোটার কোথায় ভোট দিচ্ছেন তা দেখছেন। তিনি নিজের নাম মো. শহীদ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা কাউকে নৌকায় ভোট দিতে জোর করছি না। ভোটারদের অনেকে আত্মীয়-স্বজন। তাই ভোট দেওয়ার সময় এমনি দেখছিলাম।’

এখানকার তিনটি কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি একেবারে কম। কোনো ভোটারকে লাইনেও দাঁড়াতে হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা এসআই মো. কিরণ সমকালকে বলেন, ‘ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় তেমন একটা ঝামেলা হচ্ছে না। যারা ভোট দিতে আসছেন, তারা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারছেন।’

এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৩ জন, নারী ২ লাখ ৫৪ হাজার ১০৯ জন। নির্বাচনে মোট ভোট কেন্দ্র ১৯০টি।

উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ, ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ার প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির আম প্রতীকের প্রার্থী কামাল পাশা। এছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে একতারা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রমজান আলী।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এই আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। আসনটি এর আগেও একবার শূন্য হয়েছে ২০১৯ সালে। মহাজোটের শরিক হিসেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা মইন উদ্দিন খান বাদল ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারির উপ-নির্বাচনে জয়ী হন মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।