যে কারণে প্রযুক্তি খাতে ৫ মাসে ২ লাখ কর্মী ছাঁটাই

চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে বিশ্বের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোয় অন্তত দুই লাখ কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। গুগল, মাইক্রোসফট, আমাজন, টুইটার ও মেটাসহ বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোও রয়েছে কর্মী ছাঁটাইয়ের এ যজ্ঞের তালিকায়। উচ্চ সুদহার, বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমে যাওয়া ও বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মী ছাঁটাই ট্র্যাক করছে লেঅফস ডট এফওয়াইআই নামের একটি স্টার্টআপ। তারা বলছে, ৭৪৯টি প্রযুক্তি কোম্পানি থেকে ২ লাখ ২ হাজার ৩৯৯ জন কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এ সংখ্যা ২০২২ সালের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি। গত বছর ১ হাজার ৫৭টি টেক কোম্পানি থেকে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৯ জন কর্মচারীর চাকরি হারানোর খবর জানা গিয়েছিল।

বেশিরভাগ ছাঁটাই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান থেকে। যার মধ্যে রয়েছে গুগলের প্যারেন্ট প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট, ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটা, ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজন ও মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠান। রেডিট, থ্রিএম, ইয়াহু, আফ্রিম, জুম, ডেল, আইবিএম, সেলসফোর্স ও পেপাল সাম্প্রতিক মাসগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার কর্মীকে বরখাস্ত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কানাডিয়ান ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান শপিফাই মে মাসে ২ হাজার ৩০০ কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং জার্মান ডেলিভারি পরিষেবা ফ্লিঙ্ক এপ্রিলে আট হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। সুইডিশ টেলিকমিউনিকেশন ফার্ম এরিকসন ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ৮ হাজার ৫০০ কর্মী কমিয়েছে। একই সময়ে জার্মান সফটওয়্যার কোম্পানি এসএপি জানুয়ারিতে তিন হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে।

বড় বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর কর্মী ছাঁটাইয়ের নানা কারণ থাকতে পারে। তবে সাধারণ কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে-তাদের সংস্থার পুনর্গঠন, খরচ কমানো, নতুন কোনো ক্ষেত্র উন্মোচনের জন্য অর্থ কিংবা সম্পদের পুনঃবণ্টন, কোম্পানির কৌশল পরিবর্তন, মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক মন্দা ও করোনা মহামারির প্রভাবের মতো ঘটনা।

তবে এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, ছাঁটাই একটি জটিল সিদ্ধান্ত এবং সেটি যদি হয় এত বড় পরিসরের তাহলে বিষয়টি আরও জটিল। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি সংস্থার জন্য নির্দিষ্ট কোনো পরিস্থিতি, কিংবা ভিন্ন কোনো কারণের ফলে বিষয়টি ঘটতে পারে।

বৈশ্বিক বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, অনিশ্চিত অর্থনৈতিক অবস্থার মুখে প্রযুক্তি শিল্পে এই ছাঁটাই ঘটছে। এ ছাড়া বলা হচ্ছে, ডিজিটাল বিজ্ঞাপনদাতাদের ব্যয় হ্রাস এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের ব্যয় নিয়ন্ত্রণও এখানে প্রভাব ফেলছে।