শৈলকুপায় নামের ভুলে ২৫ বছর পর ভাতা বন্ধ, মুক্তিযোদ্ধার মানবেতর জীবন যাপন

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের ভুল থাকায় এক মুক্তিযোদ্ধার ২বছর যাবৎ ভাতা বন্ধ থাকায় তিনি এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কামারিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন বিশ^াস ১৯৯৬ সাল থেকে দীর্ঘ ২৫ বছর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পেয়ে আসছিলেন।২০২১ সালের নভেম্বর মাসে হঠাৎ তার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা সমাজ সেবা দপ্তরে ভাতা বন্ধের কারন জানতে চাইলে তাকে জানানো হয় যে তার জাতীয় পরিচয় পত্রে নামের ভুল থাকায় ভাতা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। এরপর জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে ধরনা দিয়েও আজ অবধি পুনরায় তার ভাতা উত্তোলনের কোন ব্যাবস্থা করতে পরেননি। এদিকে ২ বছর ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন বিশ^াস জানান যে, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে তিনি ভারতে যান ও মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রশিক্ষন নিয়ে দেশে ফিরে যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন।বাংলাদেশ গেজেটে তার মুক্তি বার্তা নং ৪০৯০৩০১৯৮ এবং বেসামরীক গেজেটে গেজেট নং ১৩৯৮। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে নিয়মিত ৩০০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছিলেন পরবর্তিতে ভাতা বেড়ে ১০,০০০ টাকা হয়। সরকার প্রদত্ত এ ভাতা গ্রহন করে কোনমতে তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করে আসছিলেন।গত ২ বছর যাবৎ কোনো ভাতা না পওয়ায় বৃদ্ধ বয়সে তাকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান যে,ছোট বেলায় তিনি পার্শ¦বর্তী চর-চাগদা গ্রামে মামার বাড়ীতে মানুষ হন। মামা-মামী তাকে আনন্দ মোহন বিশ^াস নামে ডাকতেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি মামা বাড়ী থেকেই যুদ্ধে যোগ দেন। আনন্দ মোহন বিশ^াস নামেই তিনি যুদ্ধে নাম লেখান। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবা-মায়ের প্রদত্ত নাম অজিদ কুমার বাড়ই পিং অশি^নী কুমার বাড়ই হওয়াতে তার ভাতা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। এব্যাপারে বিভিন্ন দপ্তরে দিনের পর দিন ঘুরেও তিনি কোন সুফল পাননি ।তার সহযোদ্ধা ননী গোপাল বিশ^াস,মোনোয়ারুল ইসলাম,ইবাদত হোসেন ও আব্দুল কাদের জানান তিনি তাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন এবং এক সাথেই তারা ভাতাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মনোয়ার হোসেন মালিথা জানান, মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন বিশ^াস একজন তালিকাভুক্ত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দীর্ঘ ২৫ বছর তিনি ভাতা পেয়ে আসছিলেন। এখন তিনি ভাতা না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। গত ২ বছর তিনি ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলেই তার এ সমস্যা সমাধান করতে পারে এব্যাপারে আমি নির্বাচন অফিসে কয়েকবার তাগাদা দিয়েছি কিন্তু কতৃপক্ষ অজ্ঞাত কারনে তার এ সমস্যার সমাধান করছে না। আমি আশা করি যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত আমলে নিয়ে সমাধান করবেন।