দরজা ভেঙে সাদির ঝুলন্ত মরদেহ দেখেন শিবলী

কিংবদন্তী রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ছোট ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ। তিনি নিজেই সাদির ঘরের দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।

বুধবার (১৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে সাদির মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে শিবলী মোহম্মদ বলেন, আমি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। ভাই আমার আর নেই। আর বেঁচে নেই।

অবশ্য তিনি জানিয়েছেন, সাদি তানপুরা দিয়ে গানের অনুশীলন করেছিলেন। সন্ধ্যার পর হঠাৎ তার ঘরের দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। দরজা ভেঙে তিনি সাদিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পান। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করেন।

শিল্পীর পারিবারিক বন্ধু নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপাও এ মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, উনার (সাদি মহম্মদ) মা মারা যাওয়ার পর থেকেই তিনি ট্রমার মধ্যে চলে যান। স্বাভাবিক ছিলেন না মানসিকভাবে। মা হারানোর বেদনা সম্ভবত তিনি নিতে পারেননি। এভাবেই চলছিল। বুধবার রোজা রাখেন, ইফতারও করেন। এরপরই তিনি নীরবে না ফেরার দেশে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করছি।

২০২৩ সালের ৮ জুলাই বার্ধক্যজনিত রোগে মৃত্যু হয় সাদি মহম্মদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহর (৯৬)। এর আগে ১৫ বছর হুইল চেয়ারে বসেই স্বাভাবিক জীবন পার করছিলেন তিনি।

সাদি মহম্মদ রবীন্দ্রসঙ্গীতের ওপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন।

২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে তার ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।

তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক ছিলেন। ২০১২ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমী তাকে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করে।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তার বাবা সলিমউল্লাহকে হত্যা করে। তার বাবার নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমউল্লাহ রোডের নামকরণ করা হয়েছে। সাদির ভাই শিবলী মোহাম্মদ বাংলাদেশের একজন নৃত্যশিল্পী।