গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘে পাস

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাব পাস করেছে। নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছে।

সোমবার প্রস্তাবটি পাস হয়। যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে।

বাকি ১৪ সদস্য এতে ভোট দেয়। খবর আল জাজিরার।

ভোটের পর জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাসে বিলম্ব হওয়ার ক্ষেত্রে হামাসকে দায়ী করেন। ভোটে বিরত থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাবের সবকিছুর সঙ্গে একমত ছিলাম না।

তিনি বলেন, হামাসের ওপর নিন্দা জানানোর প্রস্তাবসহ সুনির্দিষ্ট কিছু প্রধান সম্পাদনা উপেক্ষা করা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে মানবিক সহায়তা বাড়বে।

ভোটের পর এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস বলেছে, চূড়ান্ত প্রস্তাবে সেই ভাষ্য ছিল না, যা যুক্তরাষ্ট্র অপরিহার্য বলে মনে করে। এই ভোট নীতির পরিবর্তন বোঝায় না।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস বলেছে, প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো দেওয়ার যে ব্যর্থতা, তা আগের অবস্থান থেকে স্পষ্ট পশ্চাদপসরণ। এটি হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রচেষ্টার পাশাপাশি ১৩০ জনেরও বেশি জিম্মি মুক্তির প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অবস্থানের আলোকে ওয়াশিংটনে উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠাবেন না নেতানিয়াহু।

আল জাজিরার কূটনৈতিক সম্পাদক জেমস বেস বলেন, এটি খুব, খুব তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। প্রায় ছয় মাস পর … ভোট, প্রায় সর্বসম্মতভাবে গাজায় অবিলম্বে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি উঠেছে।

বেস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তিনবার ভেটো দিয়েছে। এবার তারা (প্রস্তাবটি) পাস হতে দিয়েছে।

তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের রেজল্যুশন বা প্রস্তাব হলো আন্তর্জাতিক আইন। এসব আইন জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক হিসেবে দেখা হয়।

ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েই যাচ্ছে। সেখানকার মানবিক সংকট তীব্র। কয়েক মাস ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটাতে আন্তর্জাতিক আহ্বানের মধ্যে এ ভোট অনুষ্ঠিত হলো।

গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত। ইসরায়েলি দখল ও বোমা হামলা উপত্যকাটিকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। এমনটি বলেছে জাতিসংঘ।

৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। বাকি বাসিন্দারা ক্ষুধায় দিন কাটাচ্ছেন।

যুদ্ধবিরতির আহ্বানে জাতিসংঘে ওঠা একাধিক প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র আটকে দিলেও গেল বৃহস্পতিবার নিজেই একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে। তবে চীন ও রাশিয়ার ভেটোতে তা আটকে যায়।