যশোরের শার্শা থানায় অভিযোগ করায় সাংবাদিককে হত্যার হুমকি কিশোর গ্যাংয়ের

যশোর জেলার শার্শা উপজেলার কায়বার বাইকোলা গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বিভিন্ন চায়ের দোকানে ও মোড়ে মোড়ে কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে আতংকিত গ্রামের মানুষ ।

যশোরের শার্শা উপজেলার পাঁচ কায়বা ও বাইকোলা গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বিভিন্ন চায়ের দোকানে ও মোড়ে মোড়ে কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে আতংকিত গ্রামের মানুষ। কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা দেশী অস্ত্র নিয়ে গ্রামের মানুষদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের উত্যক্ত করছে দীর্ঘদিন।

কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর নেমে আসে হামলা,নির্যাতন ও হত্যার হুমকী। প্রতিনিয়ত তারা বিভিন্ন স্কুলের মাঠে বসে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করছে। পাশাপাশি মাদক ব্যবসা ও মাদক পাচারে কাজ করছে। স্থানীয় কিছু চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী চোরাচালানীরা প্রকাশ্যে এসব কিশোর গ্যাংদের সেল্টার দিচ্ছে। ১৫/২০ জনের এই কিশোর গ্যাং সদস্যরা প্রশাসনের নাকের ডগায় দাপিয়ে বেড়াল ও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কিশোর গাঙ্গের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে গ্রামবাসীদের জিম্মী করে রেখেছে‌ কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রাসী দলবল।

আবার নেশার টাকা জোগাড় করতে এইসব কিশোর গ্যাং সদস্যরা চুরি, ছিনতাই মারামারি ও চাঁদাবাজি করছে অবাধে। নিজেদের অবস্থান ঠিক রাখতে দু’একজন মাদক ব্যবসায়ী এদের ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হলেন- বাইকোলা গ্রামের হবিবার রহমানের ছেলে মুত্তাকিম (২২) একই গ্রামের জাহান আলী মোল্লার ছেলে কবিরুল (২১),পাঁচ কায়বা গ্রামের হাসানের ছেলে তুহিন (২০) একই গ্রামের মনোয়ার (মনু) এর ছেলে বকুল হোসেন (২২)।

কিশোর গ্যাং সদস্যরা নিয়মিত কায়বা বাইকোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় মাদক সেবন করে।এসব দেখে গত ১ এপ্রিল সাহস করে ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাগআঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে কর্তব্যরত এসআই হামিদুর রহমানের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন স্থানীয় সাংবাদিক আল মামুন। পরে পুলিশ ওই বিদ্যালয়ের মাঠে গিয়ে আল আমিন নামে এক যুবককের কাছে কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচার ও নির্যাতন সম্পর্কে জানতে চাওয়ায় ওই যুবকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে কিশোর গ্যাং। বিষয়টি জানার পর ওই সাংবাদিক পুলিশকে ঘটনা অবহিত করেন। পরে ওই কিশোর গ্যাং সাংবদিকের হাত পা কেটে নেওয়ার হুমকী প্রদান করেন।

পরের দিন ২ এপ্রিল সাংবাদিক আল মামুন শার্শা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন কিশোর গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ দায়েরের ৫ ঘন্টা পর ওইদিন রাত ১০ টার দিকে আবারও ওই সাংবাদিকের বাড়িতে গিয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালাজ ও হুমকি ধামকি দেয়। তারা বলে আসে তোর সাংবাদিক ছেলের হাত পা কেটে নেবো। বর্তমানে সাংবাদিকের পরিবার শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আবার কখন কি ঘটনা ঘটে এই ভেবে।

বাইকোলা গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ ওমর ফারুক জানান, কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে আমরা মুরব্বিরা এখন কোন মোড়ে চায়ের দোকানে বসতে পারি না, কিশোর গ্যাংয়ের চাঁদাবাজি, অত্যাচার এবং রাস্তাঘাটে মাদক সেবন কায়বা এলাকাকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। এগুলো প্রশাসনকে কঠোরভাবে দমন করার দাবি জানাচ্ছি।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ.মো মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা বিভিন্ন এলাকায় আমাদের সোর্স ও পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে কিশোর গ্যাং এর তালিকা করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এসব কিশোর গ্যাং’কে শার্শা থেকে নির্মূল করতে পুলিশসহ প্রশাসনের একাধিক টিম কাজ করছে বলে তিনি জানান।