জিয়ার ম্যুরাল ভাঙা নিয়ে যা বললেন শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ শহরের জিয়া হলে জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, ২০১৪ সালেই এটা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজউক এটাকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এ কারণেই এটা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চার তারিখে মিটিং হবে সেখানে এমনি এটা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিন তারিখ কেন ভাঙতে যাব! ওরাই হয়ত এটাকে ভেঙেছে অথবা ভেঙে পড়েছে। ওরা এটা নিয়ে ইস্যু তৈরি করতে চায়।

ওরা চায় না এখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রতিষ্ঠিত হোক। আমি তাদের বলতে চাই আপনারা পারবেন না।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

 

শামীম ওসমান বলেন, গতকাল সাংবাদিকের ফোন পেয়ে আমি জেনেছি জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানে বিএনপির কিছু নেতা আমাকে দায়ী করেছে। আমি তাদের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না। জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙতে চাইলে বহু আগেই ভাঙতাম। দিনের বেলা ভাঙতাম। এর আগেও তো ১৯৮৯ সালে জিয়াউর রহমানকে আটকে দিয়েছি। জীবিত অবস্থায়ই তাকে আটকে দিয়েছি। সুতরাং রাতের বেলা ভাঙার প্রশ্ন আসে না। ওরা এটা করে একটা ইস্যু তৈরি করতে চায় যেন এ কাজটা না হয়।

 

 

বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা বলেছি এখানে একটি মঞ্চ হবে। এখানে ১৯৪৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সকল ইতিহাস ধারণ করা হবে। এখানে বিএনপিরও গর্ববোধ করা উচিত। কারণ তাদের পূর্ব পুরুষরাও এখানে অবদান রেখেছেন। গতকাল দেখলাম আমাকে দায়ী করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল তো থাকারই কথা না। পঞ্চম সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে।

 

তিনি বলেন, তারা নাকি ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের জনগণ ও আমি তাদের আল্টিমেটামের শক্তি দেখতে চাই। ওরা খুব নোংরা ও অশ্লীল কথা বলেছে। এসকল অশ্লীল কথা বলে আমার লোকজনকে ফোন করার আগেই তারা বলল শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে কথা বললে সেন্ট্রালে আমাদের দাম বাড়ে। আমার বিরুদ্ধে কথা বলে বড় নেতা হতে পারলে হোক। আমার আপত্তি নেই। কারা এসব কথা বলেছে আমি তাও জানি না।

 

এ সংসদ সদস্য বলেন, এটা আমাদের কর্তব্য স্মৃতি রক্ষা করা। এখানে কেউ বাধা দিলে আমরা তাদের প্রতিহত করব, মানুষ প্রতিহত করবে। এর আগেও কিছু এক্সট্রিম বামপন্থী এটা নিয়ে কথা বলেছিল। আমি এখানে বসে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছি। তারা আর কোনো কথা বলেনি। এখানে জামায়াত ডান বা বাম নেই। এরা একটা গ্রুপ। ওরা নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করতে চায়।

 

শামীম ওসমান বলেন, গতকাল তারা নাকি আমাকে নিয়ে খুব অশ্লীল কথা বলেছে। সাংবাদিকরা বলছে, নারায়ণগঞ্জে কিছু ঘটলে বিএনপি ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আপনাকে দায়ী করে কেন। আওয়ামী লীগকে দায়ী করে না, আরও এমপি, মন্ত্রী, মেয়র আছে তাদের দায়ী করে না। আমি মনে করি তারা এ কারণেই দায়ী করে কারণ ১৬ জুন আমাকে বোমা মেরে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। এরাই ক্ষমতায় আসার পর বায়তুল আমানে গুলি করা হয়েছে। এ ধরনের অশান্তির রাজনীতি করার চেষ্টা যারা করেন তাদের বলতে চাই অন্য এলাকায় গিয়ে এসব কাজ করুন। নারায়ণগঞ্জের মানুষের ধৈর্যের বাধ ভাঙছে। প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্যদের বলেছে যারা জ্বালাও পোড়াও করেছে তাদের চিহ্নিত করতে। আমরা তা করিনি, চেয়েছি যে তারা শোধরাক। এমন কিছু করবেন না যেন নারায়ণগঞ্জ অশান্ত হয়ে ওঠে।

 

৬ দফা মঞ্চ তৈরির বিষয়ে শামীম ওসমান বলেন, এ কাজটা হলে নারায়ণগঞ্জে একটা খোলামেলা জায়গা হবে। বাচ্চারা শহীদ মিনারের চিপায় বসে থাকে। সেখানে তারা বসতে পারবে, গিয়ে ইতিহাস জানতে পারবে সেখানে। আমার দুই নেতা ওবায়দুল কাদের সাহেব ও ওবায়দুল মোক্তাদির সাহেব বলেছেন দ্রুত এ কাজটা করো। আশা করি আগামী ১৫ আগস্ট এ মঞ্চ আমরা ওপেনিং করব। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের নিয়েই এটা ওপেনিং করব।