যৌতুকের জন্য গৃহবধুকে নির্যাতন করে হত্যা, বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে অসহায় পরিবার

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের বেলাট দৌলতপুর গ্রামের মৃত কাজী মশিয়ার রহমানের মেয়ে সাবিনা ইয়াছমিন লাকী। বাবা মায়ের ৬ সন্তানের মধ্যে লাকি ছিলো ৪ নম্বর সন্তান। ২০০২ সালে পারিবারিক ভাবে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার খয়েরহুদা গ্রামের মৃত আব্দুর রহিম খানের ছেলে ফারুক হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে দাম্পত্য জীবনে তাদের ২ টি সন্তানের জন্ম হয়। ২ সন্তান নিয়ে সুখেই চলছিলো তাদের সংসার।

বিয়ের কয়েক বছর পর ২০১৯ সালে হঠাৎ লাকির কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে ফারুক হোসেন। টাকা দিতে না পারায় বেধড়ক মারপিটসহ নানা ভাবে নির্যাতন শুরু করে যৌতুকলোভী ফারুক হোসেন। দিন দিন বাড়ে তার অত্যাচারের পরিমান। নির্যাতনের কারণে ওই সময় হাসপাতালে ভর্তি হতেও হয়েছিলো লাকিকে। সেই সময় পরিবার থেকে শালিশী বৈঠক করে মিমাংসা করে দেয়। এরপর ও থেমে থাকেনি ফারুক হোসেন। দিনের পর দিন বাবার বাড়ী থেকে টাকা আনার জন্য মারধর নির্যাতন শুরু করে।

বাবা ২০০৯ সালে মারা যাওয়ার পর সংসার ভার পরে তার ভাই জামিরুল ইসলামের উপর। যৌতুকলোভী ফারুক দিনের পর দিন যৌতুকের জন্য চাপ দিলে উপায় না পেয়ে লাকি ভাইয়ের কাছে চলে যায়। বোনের সুখের কথা চিন্তা করে ভাই জামিরুল মাঝে মাঝেই টাকা দিতো। সর্বশেষ গত ১০ এপ্রিল আবারো যৌতুক দাবী করে ফারুক হোসেন। এবার লাকি টাকা আনার কথা অস্বীকার করলে শুরু হয় অকথ্য নির্যাতন। পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হত্যা করে। পরে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। পরিবার থেকে বিষয়টি জানার পর অভিযোগ করলে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দিয়ে থানা মামলা নিতে অস্বীকার করে। পরে বিচারের আশায় চুয়াডাঙ্গা আদালতে মামলা দায়ের করেছে তার ভাই জামিরুল ইসলাম।

ভাই জামিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, টাকার জন্য আমার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। আমি থানায় মামলা দিলে থানা মামলা নেয়নি। আমি আদালতে মামলা করেছি। আমি আমার বোন হত্যার বিচার চাই। আমি চাই আর কোন ভাই যেন যৌতুকের কারণে বোন হারা না হয়।