বন রক্ষা করতে না পারায় মানুষ ও বণ্যপ্রাণীর মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছে বলে উল্লেখ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অডিটোরিয়ামে ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়াড-২০২৪ এর মূল প্রতিপাদ্য ছিল, ‘আজকের তারুণ্য, বাঁচাবে অরণ্য’।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বন্যপ্রাণী যদি আমাদের আবাসে চলে আসে, এটা তাদের জন্য যেমন নিরাপদ না এবং আমাদের জন্যেও নিরাপদ থাকছে না। সুন্দরবন থাকায় বিভিন্ন দুর্যোগে আমরা নিরাপদে থাকি। আমাদের বর্তমান শালবনের সঙ্গে পূর্বের শালবনের কোনো মিল নাই।
তিনি বলেন, হাতি যখন খাবার পায় না, তখন এটি আমাদের আবাসে চলে আসে। তখন হাতি মানুষের ধান নষ্ট করে। আসলে সে নষ্ট না খেতে চায়। হাতির সঙ্গে কৃষকের কোনো দ্বন্দ্ব নাই। হাতি কলা গাছ কিংবা অন্য কোনো খাবারের গাছ খায়। এই প্রক্রিয়ায় হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব লেগে যায়। কৃষকেরও ওই হাতির সঙ্গে দ্বন্দ্ব নাই। এই দ্বন্দ্ব আমরা লাগিয়ে দিই। কারণ আমরা হাতির আবাস বন রক্ষা করি নাই। হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব হচ্ছে এই জন্যে যে আমরা বন রক্ষা করতে পারছি না।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আরও বলেন, হাতি অত্যন্ত নিরীহ, ভদ্র, সুশৃঙ্খল এবং পরিবারকেন্দ্রিক প্রাণী। হাতির মতো একটা নিরীহ প্রাণীকে বিস্ফোরক দিয়ে এই বাংলাদেশে মেরে ফেলা হয়েছে।
রেজওয়ানা হাসান বলেন, যদি আমরা জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে না পারি, তাহলে বলা হচ্ছে ২০৫০ সাল নাগাদ ৫০ শতাংশ বন্যপ্রাণী পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে হলে দিনের বেলা লাইট ফ্যান চালু করে অনুষ্ঠান করা বন্ধ করতে হবে। এমনভাবে বাড়ি বানাতে হবে যেন দিনের বেলা লাইট ফ্যান না চালাতে হয়। যেন মাটির নিচ থেকে কয়লা গ্যাস তেল উত্তোলন করতে না হয়। এই জীবাশ্ম জ্বালানি যত তুলব তত পৃথিবী উত্তপ্ত হবে। ততোই পর্বতমালার বরফ গলবে, তাপমাত্রা বেড়ে যাবে, তখন জীববৈচিত্র্য কেনো, আমরা পৃথিবীকেই বাঁচাতে পারবো না। জলবায়ু পরিবর্তন হলে আমাদের দেশের ১৯টা উপকূলীয় জেলা সমুদ্রের নিচে চলে যাবে। যদি আমরা জীবন যাত্রার পরিবর্তন না আনি জলবায়ু পরিবর্তন কোনোভাবেই রোধ করা যাবে না।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।