বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন যশোর জেলা শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারবক হোসেন বলেছেন,আগামী জাতীয় নির্বাচনে যাতে দুর্বৃত্ব ও পতিত সরকারের দোসররা ক্ষমতায় না আসতে পারে সে জন্য শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রত্যেক কর্মীদের পাহারাদারের ভুমিকায় থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন,জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ দেশে ইনসাফপূর্ণ একটি সমাজ কায়েম করতে চায়,আল্লাহর রুহুলিয়াত কায়েম করতে চায়। এজন্য জামায়াতে ইসলামীর আমীর ড. শফিকুর রহমান সারাদেশে ছুটে চলছেন, মানুষকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। দেশের জনগনও আগামী দিনের জন্য জামায়াতকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে।

তিনি বলেন, ইনসাফপূর্ণ সমাজ যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে শ্রমিক শ্রেণী-খেটে খাওয়া মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে, তারা নির্যাতনের শিকার হবেনা। এজন্য আমাদের একটি আওয়াজ হবে আমরা আগামীতে ইনসাফপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে বদ্ধ পরিকর।
জামায়াত নেতা মোবারক হোসেন শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন যশোর জেলা শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। সংগঠনের যশোর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল মালেক খানের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা ও জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল, শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামায়াতের যশোর-কুস্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের যশোর-কুস্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক মশিউর রহমান।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের, মো. আব্দুর রহিম, দ্বীন ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আকতারুজ্জামান জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।

জামায়াত নেতা মোবারক হোসেন বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার গোটা দেশকে জিঞ্জিরাবদ্ধ করে রেখেছিলো, কারাগারে পরিনত করছিলো। যারা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে মজলুম সংগঠন হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী ও শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন। এই সংগঠনের ১১ জন রাহবারকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে শহীদ মতিউর রহমান, আলী আহসান মুজাহিদ, মীর কাশেম আলী, আব্দুল কাদের মোল্যা অন্যতম। বিনা বিচারে কারাগারে মেরে ফেলা হয়েছে বর্ষীয়ান রাজনীতিক অধ্যাপক গোলাম আযম, কুরআনের পাখি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে।
কিন্তু শত নির্যাতন করেও জামায়াতে ইসলামীকে ধ্বংস করতে পারেনি। এদেশের ছাত্র জনতার গণঅভ’ত্থানে সেই স্বৈরাচার হাসিনাকে পালাতে বাধ্য হতে হয়েছে। আল্লাহ গোটা বিশ্ববাসীকে তার নজির দেখিয়েছেন।

তিনি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পাশের রাষ্ট্রে বসে তার নেতাকর্মীদের উজ্জিবীত করতে বলছে আমি টুপ করে যেকোনো সময় ঢুকে পড়বো। কিন্তু আমাদের স্পষ্ট বার্তা তাকে টুপ করে ঢুকতে দেয়া হবেনা। আমরাই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনবো। ধরে আনা হবে, ফাসির কাষ্টে উঠানো হবে। গণহত্যাকারী হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করা হবে। শেখ হাসিনা যে আয়না ঘরে শত সহস্রাধিক নিরীহ মানুষকে নির্যাতন নিপীড়ন করেছে সেই আয়না ঘরেই শেখ হাসিনার ঠিকানা হবে।

আনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বলেন আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি যাদের অবদানের গত ৫আগস্ট নয়া বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। র্দীঘ ২৫ বছর স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় ছিল তাদের আমলে কোন শ্রেণী পেশার মনুষের অধিকার বলতে কিছুই ছিল না । সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে ছিল। তারা ছলে বলে কলে কৌশলে জনগণকে জিম্মি করে জনগণের দোহাই দিয়ে শ্রমিকদের উপর চেপে বসেছিল । দেশে যখন বৈষম্যের মাত্রা চরম পর্যায় পৌঁছে গিয়ে ছিল আর সেই সময় ছাত্র জনতা রুখে দাঁড়াল। তখনি খুনি হাসিনা দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে। যারা সাড়ে ১৫ বছর মানুষকে শোষণ করেছে তাদেরকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সম্মেলনে যশোর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নবগঠিত কমিটিতে মাওলানা আব্দুল মালেক খান সভাপতি ও অধ্যাপক নুরুল আমিন সেক্রেটারি নির্বাচিত হয়েছেন।