যশোরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষা উপকরণ দেওয়ার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

যশোর শহরের চুড়িপট্টিতে অবস্থিত ১১৫ নং মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা আলেয়া পারভীনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ও নতুন বছরে ভর্তি হতে আসা কোমলমতি শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে শিক্ষা উপকরণসহ নানা অযুহাতে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

সরকারি প্রজ্ঞাপনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন প্রকার ফি বা টাকা নেওয়ার বিধান না থাকলেও তার তোয়াক্কা না করে বিদ্যালয়ের প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিভিন্ন অযুহাতে প্রতিমাসে প্রায় ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করছেন ওই শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে প্রধান শিক্ষকের দিকে অভিযোগ করে বলেন,শ্রেণি ভেদে ২০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত টাকা আদায় করেছেন।

এব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে স্কুলে গেলে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক হাফিজা বেগম, মরিয়ম খাতুন জানান প্রধান শিক্ষক সরকারি বই সংগ্রহের কাজে বাইরে আছেন। এসময় তারা জানান অভিভাবকদের এরকম অভিযোগ ভিত্তিহীন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিমাসে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজের জন্য ১৫ টাকা হারে নেওয়া হয় এছাড়া অন্যকোন প্রকার টাকা নেওয়া হয়না।

এসময় প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানায়,প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২০০ নেওয়া হয়। এছাড়া তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা হারে টাকা নেওয়া হয়।তারা আরও জানান, ভর্তির সময়ে ভর্তি ফি বাবদ ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা থেকে শুরু করে বেতন-পরীক্ষার ফি সরকার বহন করে। এমনকি শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতেই বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক খাতা কলম দেওয়া হয়। এছাড়া মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা উৎসাহ প্রদানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উপবৃত্তি দেওয়া হয়। অথচ এই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলেয়া পারভীন একক সিদ্ধান্তে এভাবে টাকা আদায় করেছেন।

এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মিটিং-এ থাকায় কথা বলতে পারেননি।তবে সহকারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহা.আব্দুল হান্নান জানান,কোনো অবস্থাতেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা যাবে না। যদি মোহনগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এরুপ অর্থ নিয়ে থাকেন তবে তিনি আইনগতভাবে অপরাধ করেছেন। আমরা দ্রুতই এব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকার সাথে মুঠোফোনের যোগাযোগ করার চেষ্টা কর হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।