যশোর শহরের চুড়িপট্টিতে ২০ কোটি টাকার জমি দখলের পায়তারা

যশোর শহরের চুড়িপট্টিতে সরকারের প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের ১২ শতক জমি দখলের পায়তারা করছে একটি ভূমিদস্যু চক্র। আর জমি দখলের কাজে স্থানীয় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও নায়েবের সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে।

ওই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে জমিটি দখলের জন্য নানা রকম ফন্দি-ফিকির করে আসছে। এর আগেও জমিটি দখলের জন্য পায়তারা চালালেও যশোর সদরের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম মিকাইল ইসলাম তা বন্ধ করে দেন। বর্তমানে ওই চক্রটি আবারো জমি দখলের জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে জমিটি অবৈধ দখলদার মুক্ত করে জেলা প্রশাসনের আওতায় নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন এলাকাবাসী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যশোর শহরের চুড়িপট্টি হাজী আব্দুল করিম রোডে বিপি স্টোর সংলগ্ন এসএ দাগ ৬৭০, আরএস খং ১৬৯১ আরএস দাগ ২০৩৯ বাই ২২১৭, ৩ শতক এবং এসএ দাগ ৬৭১ আরএস খং ১৬৪৫, আরএস দাগ ২০৪০, ৯ শতক জমি রয়েছে রাজকিরণ প্রসাদের নামে। এই জমির পৌর ট্যাক্স এখনো রাজকিরণ প্রসাদের নামে চলে আসছে।

দেশ বিভাগের পর রাজকিরণ প্রসাদ এদেশ ত্যাগ করলে জমিটি খাস খতিয়ান ভুক্ত হয়ে সরকারের কাছে চলে যায়। এই জমিতে অবৈধভাবে দখল নেয় ওই এলাকার আনোয়ার চৌধুরী ও তার ছেলে এনামুল হক চৌধুরী। তারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখল করে আসছে।

সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই জমির রেকর্ড অন্য মানুষের নামে করে নিয়েছে। পাঁচ জনের নামে ১২ শতক জমি রেকর্ড হয়েছে। এরমধ্যে ৩ শতক ৩ জনের নামে এবং ৯ শতক দুই জনের নামে। এরমধ্যে যার দাগ নং ২২১৭, আরএস খতিয়ান ৩২০৯ রের্কডিয় নাম ১। দং মো: মোতাজ আলী, পিং: মোর্তজা আলী, ২। শফিকুল আলী, পিং শামসুল আলম এবং খাদিমুল ইসলাম চৌধুরী পিং: হাসানুল ইসলাম চৌধুরী সাং হাজি আব্দুল করিম রোড নামে ৩ শতক। এছাড়া আরএস খতিয়ান নং ২৪৪২ দাগ নং ২০৪০ বিপ্লব কুমার দাস, পিং: কালীপদ দাস, ২। যমুনা রানী দাস, জং কালীপদ দাস, সাং নিজ, নামে ৯ শতক জমি রেকর্ড করেছে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই নামে কোন লোক নেই ওই এলাকায়।

সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে এনামুল হক চৌধুরীর মারা যান। এরপর তার ছেলে ডেনিয়াল জমিটি দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তিনি রাজকিরণ প্রসাদের বাড়ির প্রাচীর ভেঙে দোকান ঘর নির্মাণ শুরু করেন। এ খবর জানতে পেরে তৎকালীন সহকারী কমিশিনার (ভূমি) এস এম মিকাইল ইসলামসহ ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দোকান ঘর নির্মাণ বন্ধ করে দেন। এ কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি আবারও দখলের পায়তারা চালাচ্ছে ওই ভূমিদস্যু চক্রটি। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দারা ভূমি অফিসে অভিযোগ করলেও তারা কোন কিছুর কর্ণপাত করছে না।
নায়েব ও সার্ভেয়ারের যোগ সাজসে জমিটি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে ভূমিদস্যু চক্রটি। তারা দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে চাকরি করার সুবাধে সরকারি বিভিন্ন জমি ভূমিদস্যুদের হাতে তুলে দিয়ে লাখ লাখ টাকার অর্থবাণিজ্য করে আসছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সাইফুল ইসলামের ফোনে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
নায়েব হাদিউজ্জামান আজ না কাল যাব, এভাবে অন্তত ১৫ দিন ধরে টালবাহানা করতে থাকেন। অবশেষে আজ (শনিবার) বলেন, আজ (শনিবার) বিকালে যাব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ কাছে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।