নোয়াখালীতে খুন হওয়া নারীর লাশ নিয়ে বিপাকে পুলিশ

নোয়াখালীতে খুন হওয়া নারীর লাশ নিয়ে বিপাকে পুলিশ
নোয়াখালীতে খুন হওয়া নারীর লাশ নিয়ে বিপাকে পুলিশ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে খুন হওয়া আমেনা বেগম (৫০) নামে এক নারীর লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়ায় মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদরে পাঠানো যাচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা জানান, গত বুধবার রাতে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের শতফুল গ্রামের মো. এমরান উদ্দিনের বাড়িতে আমেনা বেগমকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ওইদিন দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে নিঝুমদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

ওসি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে নোয়াখালীতে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে দ্বিতীয় দিনের মতো হাতিয়ার সঙ্গে জেলা সদরসহ সারা দেশের নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে লাশ পচে যাওয়া রোধে থানায় কফিনে বরফ দিয়ে রাখা হয়েছে।

নিহত আমেনা বেগম উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শতফুল গ্রামের মো. এমরান উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি চার মেয়ে এবং দুই ছেলের জননী ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আমিরুল মোমিন বাবলু জানান, আমেনা বেগমের স্বামী স্থানীয় নিঝুমদ্বীপ বাজারে শুঁটকির ব্যবসা করেন। তাদের চার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে এবং দুই ছেলে জেলা শহর মাইজদীতে থেকে লেখাপড়া করছে। বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী দুজনই বসবাস করতেন। বুধবার সন্ধ্যায় এমরান বাড়িতে এসে দেখেন তার স্ত্রী নামাজ পড়ছেন। এরপর তিনি বাজারে চলে যান। এরপর স্ত্রী ঘরে একাই ছিলেন।

বাবলু আরও জানান, রাত পৌনে ১০টার দিকে এমরান বাড়ি ফিরে দেখেন বসত ঘরের দরজা খোলা এবং ঘরে স্ত্রী নেই। ঘরের মাঝের কক্ষে রক্ত পড়ে ছিল। তাৎক্ষণিক তিনি বিষয়টি বাবলুসহ স্থানীয় কয়েকজনকে মুঠোফোনে জানান। এরপর তাদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে তারা দেখতে পান আমেনার রক্তাক্ত মরদেহ পুকুরে ভাসছে। ধারণা করা হচ্ছে, কে বা কারা তাকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ বসত ঘরের পাশের পুকুরে ফেলে দিয়েছে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা বলেন, নিহতের স্বজনেরা থানায় রয়েছেন। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে চেষ্টা চালাচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। নৌ চলাচল চালু হলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।