একটি সালিশি বৈঠকের ছবি ছড়িয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য গোলাম মোমিত ফয়সালের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে দলটি তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এমন দাবি করেছেন, যা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
কবিরহাট উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, বিএনপি নেতা ফয়সাল ছাত্রদল, যুবদল করে এ পর্যায়ে এসেছেন। দুষ্কৃতকারী মহল একটি সালিশি বৈঠকের ছবি দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে হাইকমান্ডের কাছে ভুল বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে। গত ১৫ বছর তিনি দলের দুঃসময়ে নির্যাতিত, ত্যাগী নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুরভিসন্ধিমূলক প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমরা এই দুষ্কৃতকারীদের ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য গোলাম মোমিত ফয়সাল তার রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৫ সালে উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। এরপর ১৯৯৭ সালে কবিরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য, ২০০৩ সালে নরোত্তমপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক, ২০১৫ সালে উপজেলা বিএনপির প্রবাস কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, ২০১৭ সালে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, ২০১৯ সালে জেলা বিএনপির সদস্য এবং ২০২১ সালে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এভাবে গত ৩০ বছর ধরে আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে আমার ব্যবসার একটি বড় অঙ্কের টাকা ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার এক ব্যবসায়ী জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টা করে। এ নিয়ে ২০২০ সালের ৭ জুলাই কবিরহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-২২০) করি। জিডি করার তিন দিন পর ২০২০ সালের ১০ জুলাই জুমার নামাজের পরে কোম্পানীগঞ্জে একটি সালিশি বৈঠক বসে। সেখানে বৈঠকে যেতে আমাকে বাধ্য করা হয়। আমি চেয়েছিলাম জিডির সূত্র ধরে বৈঠকটি কবিরহাট থানায় হোক। ওই বৈঠকে আমার প্রতিপক্ষের হয়ে প্রভাব বিস্তার করতে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত উপস্থিত ছিলেন।
ফয়সাল অভিযোগ করেন, তখন আমি বিএনপির নেতা হওয়ার কারণে আমার ন্যায্য পাওনা টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হই। প্রতিপক্ষ ব্যবসায়ীর যোগসাজশে সালিশি বৈঠকে একটি ছবি তোলা হয়। সেই ছবি নিয়ে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার করছে। তারা ছড়াচ্ছে যে আমি ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলাম। অথচ সেই ছবিতে তিনজন মানুষ ছিলেন, যেখানে ভোটের প্রচারণার বিন্দুমাত্র রেশ ছিল না এবং তৎকালীন সময়ে কোনো ভোটের সময় ছিল না। ২০২০ সালের ওই ছবি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ২০২৫ সালের জুলাই মাসে ছড়িয়ে মিথ্যাচার করছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি অনলাইনে সংবাদ করানো হয়। এরপর গোপনে বিভিন্ন নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপে সংবাদের লিংক পাঠানো হয়। প্রকৃতপক্ষে কল্পনাপ্রসূত এ অভিযোগ অনৈতিক ও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। অথচ বিশ্ববাসী জানে নোয়াখালীতে গত ১৫ বছর ওবায়দুল কাদের প্রকাশ্যে ভোট ডাকাতি করেছেন এবং রাতের ভোটে এমপি হয়েছেন।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া বলেন, সামাজিক কারণে অনেকের বিয়ের অনুষ্ঠান, সালিশে নেতাদের যেতে হয়। তখন ডাকলে আমাকেও যেতে হতো। তাকে জোর করে বৈঠকে নেওয়া হয়। আসলে আমাদের ওপরের লেভেলে যারা আছে, মূলত যারা এমপি পদে দাঁড়াতে চায় তারাই নেতাকর্মীদের বিভাজন করে রাখছে।