জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকারীদের ওপর হেলিকপ্টার দিয়ে বোম্বিং করতে চেয়ে ছিলেন শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১-এ শেখ হাসিনা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে কথোপকথনের একটি অডিও শোনানো হয়। অডিওতে শেখ হাসিনাকে এ নির্দেশ দিতে শোনা গেছে।
আজ ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মামলার বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।
জবানবন্দির সময় তানভীর হাসান পাঁচটি অডিও ক্লিপ ট্রাইব্যুনালে জমা দেন, যার মধ্যে চারটি বাজিয়ে শোনানো হয়। এর দুটি অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনা এবং হাসানুল হক ইনুর মধ্যে ফোনালাপ শোনা যায়। এই ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে আন্দোলনকারীদের দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলতে শোনা যায়।
ফোনালাপের একটি অংশে
হাসানুল হক ইনু বলেন: আমি মনে করি যে আপনার পদক্ষেপটা সঠিকই হয়েছে। এখন পর্যন্ত যা রিপোর্ট বাংলাদেশে পাচ্ছি আর কি। খালি ঢাকাতে আপনার রামপুরার দিকে এবং শনির আখড়াতে…।
উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন: না, রামপুরা ক্লিয়ার। শনির আখড়ায় একটু ঝামেলা এখনো আছে।
ইনু বলেন: শনির আখড়ায় কিছু মোল্লারাই…।
পাল্টা শেখ হাসিনা বলেন: খালি মোল্লা না, সেখানে অনেক মাদ্রাসা। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে বলেছি। নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দিচ্ছে না আর্মিকে। আমরা ছত্রীসেনা নামাচ্ছি।
ইনু বলেন: ওহ, আচ্ছা।
শেখ হাসিনা বলেন: আমি বলছি, ক্যাজুয়ালটির দরকার নাই। ওরা ব্যারিকেড দিয়ে আছে তো, ঠিক আছে, আকাশ থেকে নামবে। কারণ, দুই পাশ দিয়ে ধরবে… ম্যাসেজটা দিয়ে দিতে পারেন।
ইনু বলেন: আচ্ছা।
শেখ হাসিনা ফের বলেন: ছত্রীসেনা পাঠানো হচ্ছে। ঠিক আছে, হেলিকপ্টার দিয়ে সোজা বোম্বিং করা হবে। হেলিকপ্টার যাক, ওপর দিয়ে মারবে।
ইনু বলেন: আচ্ছা, ওপর দিয়ে সাউন্ড বোম যাবে আর কি।
হাসিনা: হুম।
জবানবন্দিতে তানভীর হাসান আরও বলেন, গত ২৩ ডিসেম্বর তিনি এনটিএমসি থেকে শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং তিনটি মুঠোফোন নম্বরের সিডিআর জব্দ করেন।
তিনি দাবি করেন, জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সরাসরি ‘লেথাল উইপন’ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং পরিকল্পিতভাবে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
ট্রাইব্যুনালের আজকের বিচারিক কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।