ডেস্ক রিপোর্ট: চীন ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় বাঁধ নির্মাণ করছে এমন খবরে বাংলাদেশ ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ এবং ঢাকা যৌথ অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় অংশ নিতে প্রস্তুত। আর তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি আগামী নির্বাচনের আগে হলেই ভালো হয়। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেছেন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নে ভারতের উদ্বেগ প্রশমনের চেষ্টাও তিনি করেন বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশি হাইকমিশনার যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করে বলেন, এ ব্যাপারে দুই দেশের (বাংলাদেশ ও ভারত) প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়ান ওইমেন প্রেস কর্পস আয়োজিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ব্রহ্মপুত্রে চীনের বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে মুয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় পানির গতিপথ পরিবর্তনের খবরে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন এবং বাংলাদেশ যৌথ অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় অংশ নিতে প্রস্তুত, যেখানে পানির উৎপত্তি, প্রবাহ ও কোথায় গিয়ে পতিত হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আঞ্চলিক সব অংশীদারদের পূর্ণ সহযোগিতা করতে পারলে আমরা সত্যিকার অর্থেই খুশি হব।’
গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যৌথ অববাহিকা ব্যবস্থপনায় বিশ্বাস করে বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান বাংলাদেশি হাইকমিশনার।
প্রসঙ্গত, ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি তিব্বতে। চীনে এর নাম ইয়ারলুং জাংবো। বাংলাদেশে প্রবেশ করে এটি গঙ্গার সঙ্গে মিলিত হয়েছে এবং পতিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে।
এদিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে ভারত যাতে উদ্বিগ্ন না হয় সে বিষয়েও চেষ্টা করেন মুয়াজ্জেম আলী। তিনি বলেন, ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের প্রাথমিক সম্পর্ক হচ্ছে অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ে।
আলী বলেন, ‘চীন আমাদের লাইনস অব ক্রেডিটের অফার দিয়েছে। কিন্তু সেটা মুক্ত নয় এবং সেটা তাদের ফেরত দিতে হবে। তবে আমরা তুলনামূলক সুবিধার ভিত্তিতে ক্রেডিড অব প্রজেক্ট গ্রহণ করেছি।’
বাংলাদেশের লাভ হয় এমন লাইনস অব ক্রেডিডই চীনের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান এই কূটনীতিক।
তিনি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে, কিন্তু সেক্ষেত্রে নয়, যেখানে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্র আছে যেখানে চীনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। যেমন-দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ পরিশোধ, তবে চীনের সব ঋণই গ্রহণ করা হচ্ছে না।’
মুয়াজ্জেম আলী আরো বলেন, ‘আমরা ঋণের ফাঁদে পড়তে চাই না। বিশ্বব্যাংক বলেন, কিংবা চীন ও ভারত অথবা অন্যকোনো দেশের কাছে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি বাংলাদেশ। আমি ব্যক্তিগতভাবে ১৯৭১ সালের কথা ভুলিনি।’
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির ব্যাপারে তিনি বলেন, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশী এই কূটনীতিক আরো বলেন, এই চুক্তি করতে পারলে আমরা খুবই খুশি হব। আর সেটা যদি হয় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাহলে আরো ভালো।